ভারতের উত্তরপ্রদেশ বার কাউন্সিলের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দু’দিন আগে। দায়িত্ব বুঝে নিতে গতকাল বুধবার (১২ জুন) এসেছিলেন আগ্রা জেলা আদালতে। সেখানেই সহকর্মী আইনজীবী মণীশ শর্মার গুলিতে খুন হলেন উত্তরপ্রদেশ বার কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট দরবেশ যাদব। দরবেশকে লক্ষ করে গুলি চালানোর পর মণীশ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। চিকিৎসাধীন মণীশের অবস্থা সঙ্কটাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে খবর, বুধবার বেলা আড়াইটে নাগাদ বার কাউন্সিলের চেম্বারে যখন দরবেশকে সম্মান জানানোর পালা চলছে, তখনই দরবেশকে লক্ষ করে পর পর তিনটি গুলি চালায় মণীশ। আশেপাশের লোক মণীশকে ধরার আগেই সে পিস্তল দিয়ে নিজের উপর গুলি চালায়। খুনে ব্যবহৃত লাইসেন্সড পিস্তলটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। মণীশের সঙ্গে দরবেশের সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল বলেই ঘনিষ্ঠ মহলের খবর। মণীশ হঠাৎ করে কেন এই কাণ্ড ঘটাল, বোঝার চেষ্টা করছে পুলিশ।
রবিবারই উত্তরপ্রদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হয়েছেন দরবেশ। তাঁর এই পদের মেয়াদ ছিল ছ’মাস। এক প্রবীণ আইনজীবীর কথায়, ‘বুধবার সকাল সাড়ে আটটা থেকেই দরবেশ আগ্রা কোর্ট চত্বরে ছিলেন। অসংখ্য আইনজীবী তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন। বেলা ২.১৫ নাগাদ দরবেশ আইনজীবী অরবিন্দ কুমার মিশ্রর চেম্বারে যান, মণীশ-সহ আরও অনেক আইনজীবী সেখানে ছিলেন। ওই চেম্বারেই ঘটনাটি ঘটে।’ আগ্রা গ্রেটার বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন জেনারেল সেক্রেটারি দুর্গবিজয় সিং ভাইয়ার কথায়, ‘দরবেশ ও মণীশের মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। কেন এমন হল, বুঝে উঠতে পারছি না।’
এটাহের বাসিন্দা দরবেশের খুনের প্রতিবাদে ধর্নায় বসার হুমকি দিয়েছেন আইনজীবীরা। বার কাউন্সিল তাঁর পরিবারের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছে। আইনজীবীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিও উঠেছে। দরবেশের এক বোন মুজফ্ফরনগরের পুলিশ অফিসার। তাঁকেই প্রথম ঘটনাটি জানানো হয়। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তাঁর কথায়, ‘ধর্ষণ, খুন, রাজনৈতিক হত্যা ক্রমেই বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক বৈঠক করলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আইনের রক্ষাকর্তারাও এখন আর সুরক্ষিত নন।’ বসপা নেত্রী মায়াবতীরও অভিযোগ, বিজেপি সরকার উত্তরপ্রদেশে ‘জঙ্গল রাজ’ চালাচ্ছে, লোকসভা ভোটের তা আরও বেড়েছে। সূত্র : এই সময়