দুই বাসের রেষারেষিতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের পরিবারকে দুই মাসের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে রাজীবের দুর্ঘটনার দায় বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে নিতে হবে বলেও পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত।
রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে রাজীবের পরিবারকে যে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে তার ২৫ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে বিআরটিসিকে ও বাকি ২৫ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে স্বজন পরিবহনকে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় দুই বাসের রেষারেষিতে হাত কাটা পড়ে কলেজছাত্র রাজীবের। ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। হাইকোর্ট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুল জারিসহ রাজীবের চিকিৎসার খরচ দুই বাস মালিক বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে বহনের নির্দেশ দেন।
ওই রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত বছরের ১৬ এপ্রিল রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজীব।
এদিকে বাস মালিকদের আপিলের পর গত বছরের ২২ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ওই ঘটনায় দুই বাস কর্তৃপক্ষের মধ্যে কারা দায়ী ও ক্ষতিপূরণ নিরূপণ করতে একটি ‘স্বাধীন কমিটি’ গঠনে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন। পরে ওই কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে হাইকোর্ট রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ দেন।
পাশাপাশি রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) ও স্বজন পরিবহনের মালিককে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। এরপর হাইকোর্ট বিভাগ এ কমিটি গঠন করেন।
গত ১৫ অক্টোবর দুই বাস কর্তৃপক্ষের মধ্যে কারা দায়ী ও ক্ষতিপূরণ নিরূপণ করতে বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনে গণপরিবহন নিয়ে কয়েকটি সুপারিশ দেন। কমিটির অপর সদস্য হিসেবে রয়েছেন বুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন শিক্ষক ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।