যশোর জেলা জজ আদালতের সাবেক নাজির রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন রোববার (২৩ জুন) কোতোয়ালি থানায় এই মামলা করেন।
আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জন এবং দুদকের কাছে সম্পদের হিসাব গোপন করার অভিযোগে এই মামলা করা হয়। কোতোয়ালি থানার ডিউটি আফিসার এসআই সুজিত কুমার সরকার এ তথ্য জানান।
রবিউল যশোর শহরের গাড়িখানা রোডের মৃত ইসহাক সরদারের ছেলে।
জানা যায়, দুদক সম্পদের হিসাব চাইলে রবিউল মোট ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৭ টাকা গোপন করেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৭ টাকা এবং ১৪ ভরি সোনার গহনা হলেও তিনি দুদককে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৯৯৭ টাকা ও ১৪ ভারি সোনার গহনার হিসাব দিয়েছেন।
দুদকের দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক নাজির রবিউলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নোটিশ জারি করা হয়। নোটিশ পাওয়ার পর তিনি ২০১২ সালের ২৩ জুলাই দুদকে সম্পদের হিসাব জমা দেন। হিসাব অনুযায়ী গাড়িখানা রোডে ওয়ারেশসূত্রে প্রাপ্ত ভবনের ওপর থাকা স্থাপনার মূল্য দেখিয়েছেন ৭০ লাখ টাকা। পুরাতন কসবা এলাকায় ৭ দশমিক ২৫ শতক জমির ক্রয়মূল্য দেখিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা। ওই জমিতে ৬ লাখ টাকা ব্যয় করে তিনতলা ভবন নির্মাণসহ স্থাবর সম্পদের হিসাব দেখিয়েছেন ৭৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক, ডাকঘর ও অন্যান্য স্থানে বিনিয়োগ আছে আরও ৭৯ লাখ টাকা। এছাড়া ১৫ ভরি সোনার গহনা রয়েছে তার। সম্পদের মোট পরিমাণ দেখিয়েছেন ১৪ ভরি সোনার গহনা ও ১ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
এজাহারে আরও বলা হয়, এরপর দুদকের টিম সাত বছর ধরে তার সম্পদের হিসাব পর্যালোচনা করে। গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের সহযোগিতায় তদন্ত করে দেখা গেছে, পুরাতন কসবায় জমি এবং ভবন নির্মাণে রবিউল মোট ব্যয় করেছেন ৮৮ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৭ টাকা। এখানে ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৭ টাকা কম দেখিয়েছেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৬৭ লাখ ৯৯৭ টাকা।
ফলে, রবিউল ইসলাম তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৭ টাকার সম্পদ দুদককে গোপন করেছেন। এই কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) এবং ২৭(১) ধারা ভঙ্গ করার প্রমাণ পাওয়ায় মামলা হয়েছে।