কাজী শরীফ:
এ এক বিচিত্র দেশে আমাদের বসবাস। আমাদের মধ্যে যারা নিজেদের ভিআইপি বলে দাবি করেন তাদের একটা বড় অংশ সরকারি চাকুরি করেন। এদেশে সরকারি চাকুরির পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে গেলে বাংলাদেশের সংবিধান জানতেই হবে। রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি ও মৌলিক অধিকার আমি অনেককে মুখস্থ বলে ফেলতে দেখেছি। সংবিধান গলাধঃকরণ করে যারা সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ পায় তাদের মধ্যে নিজেদের ভিআইপি দাবিকারিরা তা চাকুরি প্রাপ্তির পর থেকেই ভুলতে শুরু করে। চারপাশ থেকে নিজেদের প্রশংসাবাক্য শুনতে শুনতে কখন যে তিনি সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যান তা অনেক সময় তিনি নিজেও উপলব্ধি করতে পারেন না!
যে সংবিধান পড়ে তিনি তথাকথিত ভিআইপি হয়েছেন ভুলে যান সে সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদে বলা আছে “সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। ”
আমরা যারা প্রজাতন্ত্রের নিযুক্ত কর্মচারী তারা প্রতিনিয়ত ভুলে যাই আমাদের দায়িত্ব। যাদের রক্ত পানি করা শ্রমের টাকা কর হয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হচ্ছে, যাদের করের অংশ দিয়ে রাষ্ট্র আমাদের মাস শেষে বেতন দেয় তাদের সন্তানরা ফেরি না ছাড়ায় মারা যায় আর আমাদের জন্য তিনঘন্টা বিলম্বে ছাড়ে!
আমরা আবার প্রতিবাদ করতে কুন্ঠাবোধ করি। ভাবি কিছু বললে যদি পদোন্নতি আটকে যায়, ট্রান্সফার উত্তরবঙ্গে হয়! আমরা ভয় করি আমাদের চাকুরিদাতাদের। আমরা ভুলে যাই আমরা প্রজাতন্ত্রের নিযুক্ত কর্মচারী। প্রজাতন্ত্র মানে প্রজার শাসন। আসলে আমাদের চাকুরিদাতা কে আমরা তাই জানিনা!
– সহকারী জজ কাজী শরীফের ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে সংগ্রহ।