জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখনো যথেষ্ট স্পর্শকাতর। এ কারণে কাশ্মীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে সময় দিতে বলেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কাশ্মীর নিয়ে তাড়াহুড়ো না করার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ মঙ্গলবার বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত।
কাশ্মীরের ১৪৪ ধারা তুলে নিতে ও জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন একজন সমাজকর্মী।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছেন, ‘প্রাণের মূল্যে জোর করে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর চেষ্টা করা যাবে না। আমরা সবাই চাই কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। কিন্তু রাতারাতি কিছু হওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সরকারকে সময় দিতে হবে।’
৪ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজ করে দেয় ভারত সরকার। রাজ্যসভায় অমিত শাহ বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করা হবে। জম্মু ও কাশ্মীর আর রাজ্য নয়। অমিত শাহর ঘোষণার ফলে রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। অমিত শাহ জম্মু ও কাশ্মীরকে পুনর্গঠনেরও ঘোষণা দেন। জম্মু ও কাশ্মীরকে পুনর্গঠিত করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়েছে। তার একটি জম্মু-কাশ্মীর, অন্যটি লাদাখ। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল।
জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা খারিজের ঘোষণার দিন থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করে ওই অঞ্চলে। কাশ্মীরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই কয়েক দিনের মধ্যে কাশ্মীরে যে একটিও প্রাণহানি হয়নি, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
এ সময় ভারত সরকারের আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল আদালতকে বলেন, ‘কাশ্মীরের প্রতিটি দিন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই অবস্থা ঠিক হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি।’ তিনি বলেন, কাশ্মীরে ২০১৬ সালের জুলাই মাসেও এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। তখন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। কিন্তু এবার একজন মানুষেরও মৃত্যু হয়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক অরুণ মিশ্র বলেন, ‘আমরাও প্রকৃত ঘটনা জানি। সময় দেওয়া হলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় থাকছি।’