আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সারাবিশ্বে উন্নত ও শিক্ষিত জাতিগুলোর মধ্যে অপরাধপ্রবণতা কম। তবে বাংলাদেশে শিক্ষিত লোকদের মাধ্যমেই সমাজে অপরাধ বেশি হচ্ছে। এটা কেন হচ্ছে তা নিয়ে ভাববার সময় এসেছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘শিক্ষার সব সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কিন্তু একটি বিষয় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে; তা হলো—সারা বিশ্বে এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত যে, যে জাতি যত উন্নত ও শিক্ষিত সে জাতির মধ্যে অপরাধপ্রবণতা তত কম। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নয়নের গতি ও শিক্ষার হার বাড়লেও সামাজিক অপরাধ কমছে না। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো, শিক্ষিত লোকের মাধ্যমেই অপরাধগুলো বেশি ঘটছে। এমন কোনও অপরাধ নেই যেটা শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে ঘটছে না। এটা কেন হচ্ছে তা নিয়ে ভাববার সময় এসেছে। আমাদের পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
দুর্নীতির কারণে সমাজের বিরাট অংশ শোষিত ও বঞ্চিত হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের পরিপন্থী। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দুর্নীতি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শেখ হাসিনা সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতি বাস্তবায়নে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে।’
এ সময় শিক্ষার আসল মর্মার্থ আত্মস্থ করে মাদক ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এসব ব্যাপারে সরকার সর্বদা পদক্ষেপ নেবে এবং তোমাদের সহযোগিতা করবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরও বলেন, “সরকার কেবল দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট’ নামে একটি স্বতন্ত্র ট্রাস্ট চালু করেছেন। এছাড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশে ও বিদেশে মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ফেলোশিপ চালু করেছে। দেশি-বিদেশি অনেক বেসরকারি সংস্থা, ট্রাস্ট ও প্রতিষ্ঠান মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও ফেলোশিপ প্রদানের জন্য হাত বাড়িয়ে আছে। তোমাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এই সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।”