মাত্র পাঁচ বছরের শিশুর সঙ্গে এত নৃশংসতা কেউ করতে পারে তা অনেকে ভাবতেই পারবেন না। গত রবিবার রাতে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শিশু তুহিনকে হত্যা করে গাছের সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। সোমবার ভোরে গাছের সঙ্গে ঝুলানো অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তুহিনের পেটে দুটি ধারালো ছুরি বিদ্ধ ছিল। তার পুরো শরীর রক্তাক্ত, কান ও লিঙ্গ কর্তন অবস্থায় ছিল। তুহিন ওই গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় ছিল শিশুটিকে জবাই করা হয় তার বাবার কোলেই।
এ ঘটনার পর তুহিনকে বাবা ও চাচা মিলেই খুনের বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামিরা। সে মামলায় এবার আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে লড়বেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আইনজীবীরা।
তুহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার বাবা আব্দুল বাছির ঘর থেকে বের করে বাইরে নিয়ে যান। এরপর বাবার কোলেই গলা কেটে হত্যা করেন চাচা ও চাচাতো ভাই। পরে তুহিনের পেটে দুটি ছুরি বিদ্ধ করে গাছে ঝুলিয়ে দেন তারা। তুহিনকে হত্যায় বাবার সঙ্গে অংশ নেন চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের আইনজীবী স্বপন কুমার দাস গণমাধ্যমকে বলেন, শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ড খুবই মর্মান্তিক এবং ভয়ঙ্কর। বাবার কোলে সন্তানকে জবাই করে হত্যার এমন নৃশংস ঘটনা কোথাও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী দাঁড়াবে না।
তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরকে আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে না জানিয়ে জেলা আইজীবী সমিতির সভাপতি মো. চাঁন মিয়া বলেন, এই ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই আমরা। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য আমাদের সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে। সমাজে যেসব সংঘাত, হিংসা এবং প্রতিপক্ষের প্রতি প্রতিহিংসা চলছে এসব থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তুহিন হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী লড়বে না।
এ ঘটনায় তুহিনের মা মনিরা বেগম অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতিপক্ষতে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে নিকটআত্মীয়রা, এমনটাই জানিয়েছে হত্যাকারীরা।