মামলার তদন্তে নতুনত্ব নিয়ে আসা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) জন্য ৪০ জন ‘ক্রিমিনাল স্কেচ আর্টিস্ট’ চাওয়া হয়েছে, যারা ভিকটিমের মুখের কথা শুনে অপরাধীর ছবি আঁকবেন।
পিবিআই’র জন্য পুলিশ সদরের পক্ষ থেকে নতুন করে চাওয়া ৫ হাজার ২৮৪ জনবলের মধ্যে ৪০ জন ক্রিমিনাল স্কেচ আর্টিস্টের কথাও রয়েছে। বর্তমানে পিবিআই প্রধানের পদটি ডিআইজির হলেও সেটিকে অতিরিক্ত আইজিপির পদ হিসেবে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জনবলের জন্য দেওয়া পুলিশ সদর দফতরের প্রস্তাবনাটি বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষাধীন রয়েছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র বর্তমানে জনবল রয়েছে দুই হাজার ২৯ জন। কিন্তু এই জনবল দিয়েই তারা মামলার তদন্তে নতুনত্ব নিয়ে আসে। ফেনীর নুসরাত হত্যা মামলাসহ আলোচিত অনেকগুলো মামলার তদন্ত শেষ করে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে পিবিআইতে জনবল রয়েছে দুই হাজার ২৯ জন। এটিকে বাড়িয়ে সাত হাজার ৩১৩ জনে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জনবলের নতুন প্রস্তাবনায় একজন অতিরিক্ত আইজিপি চাওয়া হয়েছে। ডিআইজি চাওয়া হয়েছে পাঁচ জন এবং অতিরিক্ত ডিআইজি ১০ জন। বর্তমানে বিশেষ পুলিশ সুপার আছে ১০ জন। আরও ৬৫ জন পুলিশ সুপার যোগ করে ৭৫ জনে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার চাওয়া হয়েছে ৯৮ জন, সহকারী পুলিশ সুপার আট জন, ইন্সপেক্টর ৯২৪ জন, সার্জেন্ট ৫ জন, এসআই এক হাজার ২৯ জন, এএসআই এক হাজার ৮৪ জন, নায়েক ৬৫ জন, কনস্টেবল তিন হাজার ৬৭১ জন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, স্টেনোগ্রাফার ১৯ জন এবং ক্রিমিনাল স্কেচ আর্টিস্ট ৪০ জনসহ বিভিন্ন পদে মোট সাত হাজার ৩১৩ জন জনবল চাওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘ক্রিমিনাল স্কেচ আর্টিস্ট’ পদ নামে পুলিশে বর্তমানে কোনও পদ নেই। শুধুমাত্র পিবিআই’র জন্য নতুন এই পদটি সৃষ্টি করে জনবল দিতে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। ফেনীর নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পিবিআই আদালতে যে চার্জশিট দিয়েছে, সেখানে আসামিদের ছবিসহ পরিকলল্পনার স্থান স্কেচ করে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এটাই প্রথম এমন চার্জশিট দেওয়ার ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআইর প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের একটি ফরেনসিক ল্যাব আছে, যা সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও আধুনিক। সেখানে ফেস আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম আছে। এক্ষেত্রে ভিকটিমের মুখে শুনে আমাদের অপারেটররা ছবি আঁকেন। তবে এটা করতে খুব দক্ষ অপারেটর লাগে। এক্ষেত্রে আমরা বলছি, আমাদের প্রত্যেকটি ইউনিটে একজন করে আর্টিস্টের পদ সৃষ্টি করতে। যখন অপরাধীর বর্ণনা কোনও ভিকটিম দেবেন, তখন সেই আর্টিস্ট সেই অপরাধীর ছবি আঁকবেন। কয়েকটি ছবি আঁকার পর দেখা যাবে, ছবি অপরাধীর চেহারার কাছাকাছি চলে আসছে ।’
পিবিআই প্রধান বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব পুলিশ সদর দফতর হয়ে বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তারা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। সেখান থেকে পরবর্তী ধাপগুলো পার হয়ে নতুন জনবলের সঙ্গে ক্রিমিনাল স্কেচ আর্টিস্টের অনুমোদন পেলে তদন্তের ক্ষেত্রে আরেকটি বিপ্লব ঘটবে।’