ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন। এ রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী শাজাহান সাজু।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর আইনজীবী শাজাহান সাজু সাংবাদিকদের একথা জানান।
এদিকে, এই রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে নুসরাতের বাবা এ কে এম মুসা। তবে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া তদন্ত দ্রুত শেষ করায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
গেল ১০ এপ্রিল পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) মামলাটি হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই চলতি বছরের ২৯ জুন তদন্ত শেষে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত ২৭ জুন হতে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোট ৬১ কার্যদিবসে ৮৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২৪ অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য করেন।
গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে নুসরাত জাহানকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
২৭ মার্চ নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে তার মা। ২৮ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম এমরানের আদালতে নুসরাত তার ওপর যৌন নিপীড়নের জবানবন্দি প্রদান করে। একইদিন সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু জানান, মামলা তুলে না নেয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যা মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছে। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।