বিচারক থেকে পুলিশ! খুব চমৎকার যাত্রা। একমাত্র মেধাবী হলেই সম্ভব এমন জার্নির অংশীদার হওয়া। বলছি পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামিমা আক্তারের কথা। ২০০৮ সালে ৭ মাস জুডিশিয়ারীতে সহকারী বিচারক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। পরে একই বছর নভেম্বরে ২৭তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে মনোনীত হন শামিমা। পরের জার্নিটা ছিল পুলিশে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিসিএস ক্যাডার হয়ে জনগণের সেবা করবেন। চেষ্টা আর অধম্য ইচ্ছেই আজ তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করা মেয়েটি প্রমাণ করেছেন নিজেকে। তাইতো ২০১৭ সালে পাবনা জেলার মামলার তদারকি ও জেলার বিশেষ শাখার কার্যক্রম তদারকির জন্য বাংলাদেশ পুলিশ ওম্যান নেটওয়ার্ক থেকে বাংলাদেশ ওম্যান পুলিশ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ এক্সিলেন্স ইন সার্ভিস ক্যাটাগরিতে তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
শুধু তাই নয়, নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে ২০১৩-২০১৪ সালে জাতিসংঘে এফপিইউ মিশনে হাইতি যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এছাড়া ইউএসএ-এর নিউইয়র্ক, থাইল্যান্ড, ডমিনিকান রিপাবলিক, হংকং এবং সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করার সুযোগ হয়েছে।
নিজেকে কোথায় দেখতে চান এমন প্রশ্নে জবাবে শারমিন আক্তার বলেন, পুলিশের চাকরিতে ডিপার্টমেন্টাল প্রমোশন কোন র্যাঙ্ক পর্যন্ত হয় তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে আমি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে চাই ভবিষ্যতে। মানুষের অধিকার কোথায় কোথায় ব্যহত হয়, আমি নজর রাখতে চাই। সবার পাশে থাকতে চাই। এতেই আমার স্বপ্ন পূরণ হবে।
নারীদের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার ভাষ্য, নারী হিসেবে আমার কাজ করতে গিয়ে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে আমি নারী। সবাই প্রথমে নারী হিসেবে বিবেচনা করে এটাই প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু পুলিশ ডিপার্টমেন্টে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হইনি। কারণ আমাদের ছেলে ও মেয়ে অফিসারদের একই ট্রেনিং এবং একই কাজ সবাইকে করতে হয়। সো সেই জায়গা থেকে পুলিশে এমন কোনো পার্থক্য নেই। তবে এটা ঠিক, নারী পুলিশ অফিসার হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। অনেক কিছু দেখার এবং অনেক কিছু করার সুযোগ পেয়েছি এই পুলিশ বিভাগে যোগদান করে। বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শামিমা আক্তারের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীতে। এসএসসি এবং এইচএসসিতে যশোর বোর্ডে মেধা তালিকায়(বোর্ড স্ট্যান্ড) করেছিলেন তিনি। আগেই বলেছিলাম দুর্দান্ত মেধাবী শামিমা। পরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন।