৯ বছরের নিচে কোনো শিশু যদি কাউকে হত্যাও করে ফেলে তবুও তার বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো মামলা করতে পারবে না, এমনকি তাকে গ্রেপ্তারও করতে পারবে না বলে মতামত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মোবাইল কোর্টে সাজা দেয়া শিশুদের মুক্তির বিষয়ে দেয়া লিখিত আদেশে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের মতামতে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।
পাঁচ পৃষ্ঠার আদেশের লিখিত অনুলিপি রোববার (৩ নভেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কোনো ৯ বছরের কম বয়সী কোনো শিশু যদি কাউকে হত্যাও করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো মামলা করতে পারবে না, বা তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না।
এই বিধান ২০১৩ সালের শিশু আইনের ৪৪ ধারায় উল্লেখ করা আছে। মামলার আসামি করতে হলে তাকে বুঝতে হবে যে সে অপরাধ করেছে বা করছে। ৯ থেকে ১২ বছরের শিশুতো ঠিকমতো বুঝতেই পারে না যে সে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করছে।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর মোবাইল কোর্টে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে টঙ্গী ও যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে যে শতাধিক শিশু বন্দি রয়েছে তাদের মুক্তি দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এদের মধ্যে যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে তাদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়। আর যেসব শিশুর বয়স ১৩ বছর থেকে ১৮ বছর তাদের ৬ মাসের জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদুল হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে, সাজাপ্রাপ্ত শিশুদের প্রত্যেকের জন্য সাজার আদেশ সম্বলিত নথি আলাদাভাবে তৈরি করে তা ৭ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
‘আইনে মানা তবুও ১২১ শিশুর দণ্ড-’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত এসব শিশু টঙ্গী ও যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি। এই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার উপস্থিত ছিলেন।