সারা দেশের আইনজীবীদের নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অনিয়মের বিষয়ে দ্বায় স্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংস্থার চারবারের নির্বাচিত সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের দক্ষিণ হলে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বার কাউন্সিলের সকল অসঙ্গতি দূর করে আইনি শিক্ষা ও পেশার সামগ্রিক মানোন্নয়নে তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
- অনতিবিলম্বে বার কাউন্সিলের জেনারেল ফান্ড-এ এনরোলমেন্ট পরিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন বাবদ জমাকৃত অর্থ, এনরোলোমেন্ট কমিটির ব্যাংক হিসেবে জমা করতে হবে এবং ব্যয়ের পর বাকি অর্থ আইনজীবীদের বেনোভোলেন্ট ফান্ড-এ জমা করতে হবে।
- বার কাউন্সিল কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দিতে না চাইলে তা একটি যুক্তিসঙ্গত সময়-সাপেক্ষ নোটিশ দিয়ে উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হবে।
- সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অতি শীঘ্র একটি ভর্তি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
প্রায় ৩ বছর অপেক্ষার পরও ৬৭ হাজার শিক্ষানবীশ আইনজীবীকে এনরোলমেন্ট (আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্তি) পরীক্ষা অংশগ্রহণের সুযোগ না করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘আমি বার কাউন্সিলের ১২ বছর যাবৎ নির্বাচিত সদস্য। আমি নিজ দায়িত্বে কতগুলো সমস্যার সমাধান করতে না পেরে আপনাদের সামনে নিজের দায়বদ্ধতা স্বীকার করছি। সবচেয়ে যেটি দুঃখজনক প্রায় ৬৭ হাজার শিক্ষানবীশ আইনজীবী প্রায় ৩ বছর ধরে পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু এ নিয়ে আমরা কোন পদক্ষেপ নিতে পারিনি, তাই এ দায় আমাদের।
তিনি বলেন, পরীক্ষা না হওয়ার জন্য আমরা এনরোলমেন্ট কমিটির ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছি। অথচ আমরা অনেক চিন্তা ভাবনা করে মেধাবী ও যোগ্যদের আইনজীবী করার জন্য এনরোলমেন্ট কমিটি করি। ২০০৪ সাল থেকে এই কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। এই এনরোলমেন্ট কমিটির একটি অ্যাকাউন্ট আছে। এখানে যদি রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা হয় তাহলে এ কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু এসব পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওভারটাইম কাজ করেছে তাদের সে টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশনের সব টাকা বার কাউন্সিলের ফান্ডে যায়, কিন্তু এনরোলমেন্ট কমিটি চাইলে তা ভেরিফাই করে আমাদের টাকা দেয়া হয়।
বার কাউন্সিলের নির্বাচিত এ সদস্য বলেন, ‘আমি নির্বাচিত সদস্য হওয়ায় আইনজীবীদের কাছে আমার জবাবদীহীতা রয়েছে। কিন্তু আমি পারছিনা, আমি অপারগ না, আমি ব্যার্থ।’
এর আগে এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী করে গেজেট দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। কিন্তু হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিটটি শুনতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। সে অপরাগতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘কোন আইনে তারা অপরাগতা প্রকাশ করেছেন? বিচারপতি হওয়ার সময় শপথ নিয়েছেন যে তারা কখনো কারো ওপর অনুরাগ-বিরাগ, আবেগের বশবর্তী হতে পারবেনা। তবুও তারা সেটা করলে তো শপথ ভঙ্গ হবে। বিচারপ্রার্থী যেই হোক তাকে বিচার দিতে হবে।’