গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরেই ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সুমি রহমানের। এসব সম্পদ আদালতের নির্দেশে জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ওই সব সম্পদ জব্দের আদেশ দেন।
দুদক সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, কাজী আনিছ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এসব সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতের কাছে এসব সম্পদ জব্দ করার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
জব্দ করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের মা ফিলিং স্টেশন। এ ছাড়া আরও ২৬টি দলিলে থাকা জমি ও সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। সূত্র বলছে, ওই সব সম্পদের দলিলমূল্য ২০ কোটি টাকা হলেও সত্যিকারের দাম কয়েক গুণ বেশি।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা আনিছের নামে ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।
দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র বলছে, কাজী আনিছুর রহমান বর্তমানে দুবাইয়ে আছেন। তাঁর হয়ে সব অবৈধ কর্মকাণ্ড সামলাচ্ছেন নিজস্ব কিছু ক্যাডার বাহিনীর কয়েকজন সদস্যসহ তাঁর শ্যালক শুভ, চাচাতো ভাই মিঠু, চয়ন, বাবুল। তাঁরাই ধানমন্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাঁর স্থাবর সম্পদের ভাড়া তুলছেন।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সুমি রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলাদা দুটি মামলা হয়। গত বছরের ২৯ অক্টোবর মামলা দুটি করেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় আনিছের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং সুমি রহমানের ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে দুর্নীতির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এ পর্যন্ত এক হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদ অবরুদ্ধ ও জব্দ করেছে দুদক। দুদক ও আদালত সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারের নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে থাকা কয়েক শ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
এর আগে কথিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীমের বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা তাঁর প্রায় ৩২৪ কোটি টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে প্রায় ৪১ কোটি টাকার। যুবলীগের আরেক নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা তাঁর ৩১ কোটি টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকার। আরেক সাবেক যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের সম্পদ বা নগদ টাকার পরিমাণ তেমন নেই বলে দুদক সূত্রে থেকে জানা গেছে।