দেশের সব এলাকায় ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি রাস্তায় চলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনও কীভাবে চলছে, বিআরটিএ ও পুলিশ কর্তৃপক্ষকে আগামী রোববারের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
আদালতে বিআরটিএর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
পরে আইনজীবী রাফিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আদালত বলেছেন- ফিটনেস নবায়ন না করা কোনো গাড়ি রাস্তায় চলতে পারবে না। এখনও ফিটনেস খেলাপি গাড়ি কীভাবে চলছে তা বিআরটিএ ও পুলিশ কর্তৃপক্ষকে রোববারের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ গাড়ি ফিটনেস নাবয়নের বাইরে ছিল। ওই দিন আদালত আদেশ দিয়েছেন- ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িকে পেট্রোল পাম্প থেকে জ্বালানি না দিতে। ওই আদেশ অনুসারে বিআরটিএ ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রত্যেক পেট্রোল পাম্পকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ব্যানার লাগিয়েছে এবং ফিটনেস খেলাপি গাড়িকে জ্বালানি দিচ্ছে না। এসবের সচিত্র প্রতিবেদন আদালতে দেখিয়েছি।
প্রতিবেদনে গত ২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ গাড়ির মধ্যে সারাদেশে এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৪ গাড়ি ফিটনেস নবায়ন করেছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ জুলাই এক আদেশে ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়িগুলো দু’মাসের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
গত ১ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। গত ২৪ জুন আদালত ঢাকাসহ সারাদেশে ফিটনেসবিহীন তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। সে অনুসারে হাইকোর্টে এ প্রতিবেদন দেয় বিআরটিএ।
গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি সংক্রান্ত একটি ইংরেজি দৈনিকে গত ২৩ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরের আনেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। এরপর ওই দিন আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
রুলে ফিটনেসবিহীন ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, পাশাপাশি সংবিধানের ৩২ ধারার আলোকে জীবন বাঁচার অধিকার বাস্তবায়নে মোটর ভেহিক্যাল আইন ১৯৮৩ এর বিধানগুলো সঠিকভাবে পালনের জন্য কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
রুলের বিবাদীরা হলেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, চেয়ারম্যান বিআরটিএ, ঢাকার ডিসি ট্রাফিক (উত্তর ও দক্ষিণ), বিআরটিএ ডিরেক্টর (রোড নিরাপত্তা) ও দুদক চেয়ারম্যান।