দুদকের মামলায় সাবেক এমপি ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল দম্পতিকে কারাগারে পাঠানোর পর জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মান্নানকে বদলির ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আউয়ালকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় মুহূর্তেই আদালত পাড়াসহ পুরো শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পিরোজপুর শহরসহ জেলার নাজিরপুর, মঠবাড়িয়ায় সব দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে অগ্নিসংযোগ করায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পিরোজপুর জেলা আইনজীবীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আউয়াল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধ না থাকার পরেও তাদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ কারণেই বিচারককে বদলী করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টায় দেওয়া ওই আদেশের ঘণ্টাখানেক পর বিচারক আবদুল মান্নানকে বদলি করা হয়। তবে, আইন মন্ত্রণালয় বলছে, সাবেক এমপিকে কারাগারে পাঠানোর কারণে বিচারককে বদলি করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকায় অনেক আগে থেকেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। সে অনুযায়ী তাকে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্তি করতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে নথি পাঠানো হয়। সে অনুযায়ী তাকে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্তি করা হয়েছে।
এদিকে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, আউয়ালকে কারাগারে পাঠানোর কারণে বিচারককে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়নি। এর বেশি আর কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি নিরপেক্ষ থাকতে চাই। বিচারকের বদলি প্রশাসনিক বিষয়। বিষয়টি না দেখে আর কোন বক্তব্যে দেবেন না বলে জানান তিনি।
পৃথক তিনটি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া আট সপ্তাহের আগাম জামিন শেষে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীন একটি মামলায় পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক মো. আবদুল মান্নান জামিন না মঞ্জুর কারে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর কিছুক্ষণ পর জেলা ও দায়রা জজ আবদুল মান্নান ছুটিতে চলে গিয়ে যুগ্ম ও জেলা জজ নাহিদ নাসরিনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। বিকেল পৌনে চারটার দিকে আউয়াল ও লায়লা পারভীনের আইনজীবীরা ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিনের কাছে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিকেল চারটার দিকে বিচারক দুইজনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।