পিরোজপুরের জেলা জজ আবদুল মান্নানকে প্রত্যাহারের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের জবাব দিতে সময় বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি এপ্রিল মাসে ঠিক করেছেন, তবে তারিখ নির্ধারণ করেনি আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলের জবাব দিতে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করেছেন।
বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, আমরা আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেছি আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ৪ মার্চ আদালত তার আদেশে বলেন, ১১ মার্চ পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু আজ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, পিরোজপুর আদালত থেকে জেলা জজকে স্ট্যান্ড রিলিজ করার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের এই ধরনের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এ সংক্রান্ত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনলে রুল জারি করা হয়।
গত ৩ মার্চ দুপুরে দুদকের দুর্নীতি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের নেয়া জামিনের শেষ দিনে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীন। পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুল মান্নান জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনার পরপরই বিচারক আবদুল মান্নানকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।
পরে চার ঘণ্টার ব্যবধানে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিনের আদালতে জামিন বাতিলের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানানো হলে শুনানি শেষে ওইদিন বিকেল ৪টায় তাদের দুই মাসের জামিন মঞ্জুর করেন তিনি।
এই ঘটনাটিকে অনেকে স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তবে ৬ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ওই বিচারক অত্যন্ত রূঢ় ও অশালীন আচরণ করেছেন। তাই তাকে প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ কে এম এ আউয়াল এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনকে জামিন দেয়া হয়েছে। গতকাল ১১ মার্চ বিচারক আবদুল মান্নানকে কুড়িগ্রাম জেলায় বদলি করার আদেশ দেন আইন মন্ত্রণালয়।