কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতার অন্যতম সবচেয়ে বড় কারাগারে করোনাভাইরাস নিয়ে উত্তেজনা থেকে সৃষ্ট দাঙ্গায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে। রোববারের এ দাঙ্গাকে করোনাভাইরাস নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগে জেল ভাঙার সম্মিলিত প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষগুলো, জানিয়েছে বিবিসি।
লা মোদেলো কারাগারে দাঙ্গা চলাকালে ৮৩ জন বন্দি আহত হয়েছেন বলে কলম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী মার্গারিটা কাবেলো জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (২২ মার্চ) দেশটির সবগুলো কারাগারের বন্দিরা করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এ সময়টিতে কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি ও নাজুক স্বাস্থ্য সেবার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়।
কাবেলো জানান, আহত ৩২ বন্দি ও সাত রক্ষীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, এদের মধ্যে দুই রক্ষীর অবস্থা সঙ্কটজনক। সমন্বিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই সহিংসতা হয়েছে এবং দেশের ১৩টি কারাগার থেকে অস্থিরতার খবর এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ে শঙ্কার মধ্যে কারাগারগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “এ ধরনের পরিকল্পনা ও এসব দাঙ্গা হওয়ার মতো কোনো স্বাস্থ্যবিধিগত সমস্যা সেখানে ছিল না। কোনো বন্দি বা হেফাজতে থাকা কারো অথবা প্রশাসনিক কোনো কর্মী করোরই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়নি।”
তিনি জানান, বন্দিরা উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল এবং তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ও সম্পত্তি ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ আনা হতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, লা মোদেলো কারাগারের গেটের বাইরে বন্দিদের বহু স্বজন জড়ো হয়ে তাদের প্রিয়জনদের খবর জানার জন্য অপেক্ষা করছে। তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী আসার পর তারা গুলির শব্দ শুনেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে বন্দিদের জাজিম, তোশকে আগুন ধরাতে দেখা গেছে।
কলম্বিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশটির মোট ১৩২টি কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৮১ হাজার হলেও বন্দি আছে এক লাখ ২১ হাজারেরও বেশি।
এ পর্যন্ত কলম্বিয়ায় ২৩১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং দুই জন মারা গেছে।
দেশটি মঙ্গলবার থেকে জাতীয়ভাবে কোয়ারেন্টিন শুরু করতে যাচ্ছে যা ১৯ দিন স্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কলম্বিয়া নাগরিকদের চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে, তবে চিকিৎসা কর্মী, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো এবং ফার্মেসি ও সুপারমার্কেট কর্মীরা এর আওতামুক্ত রয়েছেন।
দেশটির সত্তরোর্ধ নাগরিকদের মে মাসের শেষ পর্যন্ত ঘরে ভিতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।