আফজাল হোসেন:
করোনা ভাইরাসের কারনে বন্ধ দেশের উচ্চ আদালত। যে আদালতে গড়ে প্রতিদিন ১৫-২০টা রিট হতো শুধুমাত্র সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্নের অভিযোগে। কোর্ট বন্ধ তাই সেই প্রতিকার চাওয়ার এখন সুযোগ নেই। সেই সুযোগ কি দীর্ঘসময় বন্ধ রাখা উচিৎ?
তাছাড়া করোনার আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলো শতাধিক বন্দি, ছুটি থাকায় সেই আদেশ এখনো পৌছেনি কারাগারে। ফলে জামিন পাওয়ার পরও বের হতে পারছেন না? এই আটকাদেশ কে কি বলবেন? এরকম অনেক উদাহরণ দেয়া সম্ভব।
অনেকে বলছেন, আগে বিচার নাকি জীবন। আমার মতে, দুটোই দরকার। করোনার বৈশ্বিক মহামারি থেকে আমাদের জীবন বাঁচানোর জন্য সাবধানতা যেমন দরকার ঠিক তেমনি আইনি প্রতিকার দরকার। বিচার না পেয়ে অনেকে নিজের জীবন দিয়েছে এটা যেমন ঠিক আবার অনেকে জীবন বাঁচাতেই আইনের কাছে যাননা এটাও ঠিক। সুতরাং আমাদের বিকল্প দরকার। করোনা পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি যেমন মেনে চলা দরকার, ঠিক তেমনি সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে আইনি অধিকার পাওয়ার দরজাটাও খোলা থাকা দরকার। হোক সেটা সীমিত পর্যায়ে।
বিশ্বের অনেক দেশের উচ্চ আদালতে সীমিত পরিসরে বিচারকাজ চলছে। ভারতের অনেক রাজ্যের হাইকোর্ট অনলাইনে জরুরি মামলার শুনানি করছেন। শুধুমাত্র ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। সম্প্রতি সীমিত পরিসরে অনলাইনে উচ্চ আদালত পরিচালনার দাবিতে সোচ্চার আইনজীবীদের একটি অংশ। সুপ্রিম কোর্ট বারও পক্ষে মতামত দিয়েছেন। অনলাইনে কোর্ট চালুর ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বিষয় থাকলেও এটি করা মোটেও অসম্ভব নয়। যদিও আইনজীবীদের আরেকটি অংশ অনলাইনে কোর্ট খোলার বিরোধিতা করছে। তাদের মতে, অনলাইন কোর্ট চালু হলে বড় চেম্বারগুলো সুবিধা পাবে। তবে কিভাবে সুবিধা পাবেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। হয়ত ছোট তারা অনেক আইনজীবী আইটি এক্সপার্ট না এটা বলতে চাচ্ছেন।
পক্ষে-বিপক্ষে যে যুক্তিই দেয়া হোক সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সীমিত পরিসরে কোর্ট চালু হোক। অনলাইনে হলে ভালো। কজলিস্ট অনলাইনে হচ্ছে, বেইল কনফারমেশন,মামলার বর্তমান অবস্থা অনলাইনে দেখা যায়, জাজমেন্ট, আদেশ অনলাইনে পাওয়া যায় তাহলে পুরো প্রসেডিং কেনো চলতে পারবে না। অনলাইনে কোর্ট চালু হলে দুইটা কাজ হবে। একটি বিপর্যয়ের সময়েও প্রতিকার পাওয়া যাবে। উচ্চ আদালতে ই-জুডিশিয়ারি নিয়ে একটা ধারনা পাওয়া যাবে। দেখাযাক কি হয় ২৫ শে এপ্রিলের পর!
লেখক- সাংবাদিক, সময় টিভি।