মীর আব্দুল হালিম
চুক্তি আইন রোমানদের একটি মূলনীতির উপর ভিত্তি করে শুরু হয়েছিল “Pacta Sunt Servanda” যার অর্থ হলো ‘চুক্তি অবশ্যই পালনীয়’। এই নীতিটি সিভিল, কমন এবং আন্তর্জাতিক আইন সহ সকল বিচারব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে। চুক্তি আইন ১৮৭২ দ্বারা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ এই আদর্শকে গ্রহণ করেছে, যা বর্তমানে বাংলাদেশে কার্যকর আইনী কাঠামো। বাংলাদেশের এখতিয়ারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সকল ধরণের চুক্তি এবং বাংলাদেশের বাইরে করা চুক্তি যেগুলি বাংলাদেশের ভেতরে সম্পাদনের জন্য করা হয় সেগুলি, এই আইন দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় যদি ‘প্রযোজ্য আইন’ এর উল্লেখ থাকে।
করোনাভাইরাস মহামারী ২০১৯-২০ চলাকালীন লকডাউন, জরুরী অবস্থা, চলাচলের উপর বিধিনিষেধের কারণে অনেক চুক্তিকারী পক্ষগুলো তাদের সরবরাহকারী, গ্রাহক, ক্রেতা, ব্যবসায়ী, ঠিকাদার ও পরামর্শকদের সাথে চুক্তির বিষয়ে তাদের বাধ্যবাধকতাগুলো সম্পাদন করতে পারছে না অথবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। ফলে আন্তঃসীমান্তীয় ও অভ্যন্তরীণ ব্যবসা এবং চুক্তির কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সরকারী বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শুরু করে বেসরকারী বাণিজ্যিক চুক্তিগুলো সম্পাদন না করতে পারাটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে হয়। সুতরাং, চুক্তিগুলো সম্পাদন না করতে পারলে কী হবে? যেটা চুক্তি স্বাক্ষরকারী পক্ষসমূহের নিয়ন্ত্রণের বাইরে?
ফোর্স মেজার কী?
ফোর্স মেজার ‘উচ্চতরশক্তি’ মতবাদটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি সাধারণ ভাবে গৃহীত নীতি। আর চুক্তি আইন ১৮৭২ অনুসারে নৈরাশ্য মতবাদ (Doctrine of Frustration) হিসাবে পরোক্ষ ভাবে এটি বাংলাদেশে স্বীকৃত। এটি চুক্তির একটি সাধারণ ধারা যা মূলত উভয়পক্ষকে দায়বদ্ধতা বা বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দেয় যখন কোনও পক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি অস্বাভাবিক ঘটনা বা পরিস্থিতির তৈরি হয়। কোনও পক্ষের অবহেলা বা অপব্যবহারের কোনও ফলাফল, যা ঐ পক্ষের দায়িত্ব পালনে সক্ষমতার উপর মূলত বিরূপ প্রভাব ফেলে সেগুলো ফোর্স ম্যাজিউর এর অন্তর্ভুক্ত হবেনা।
কোভিড –১৯ কী একটি ফোর্স মেজার ঘটনা?
প্রথমত, এটি ফোর্স মেজার ক্লজের উপর নির্ভর করে, যা আদালত কঠোরভাবে ব্যাখ্যা করে এবং এর মাধ্যমে কোনও ঊহ্য (implied meaning) অর্থ প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনা। আর চুক্তির বাইরে কোনও ফোর্স ম্যাজিউর মতবাদ নেই। দ্বিতীয়: যেহেতু করোনা ভাইরাস মহামারীটি মোটামুটি নতুন ঘটনা, তাই সম্ভবত বেশিরভাগ ফোর্স মেজার ক্লজগুলো এই প্রকোপকে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করবেনা। তবে, মহামারীর ব্যাপারে অন্যান্য আইনগুলো বর্তমান পরিস্থিতিকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। কিংবা বিকল্পভাবে, মহামারীর কারণে কর্মবিরতি বাসরকারী দিকনির্দেশনা এই ক্লজ দ্বারা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ঘটনাকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করেছে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স বিশ্বজুড়ে জীবনও জীবিকা রক্ষায় জরুরী ত্রাণের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং সার্বভৌম ঋণ যাতে কোভিড -১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টাকে স্থির করেনা সে নিশ্চয়তার জন্য কাজ করার আহবানও জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে, এই মহামারীটি বিশ্ব-অর্থনীতি ও বিশ্ববাণিজ্যে অভূতপূর্ব বিঘ্নের প্রতিনিধিত্ব করে, যেহেতু উৎপাদন এবং ব্যয় সারা বিশ্বে আনুপাতিক হারে কমে গেছে।
বাংলাদেশ সরকার (জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়) সাধারণ ছুটি ও শাটডাউন (সকল কাজ বন্ধ) সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে যা ৫ই মে,২০২০ অবধি চলমান রয়েছে। ভয়াবহ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করার লক্ষ্যে সরকার প্রথমে ২৬শে মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ও শাটডাউন চালু করে এবং জরুরী কাজ ব্যতিরেকে বাড়ির বাইরে না যেতে অনুরোধ করে। ১ এপ্রিল সরকার পুনরায় ঘোষণা করে যে, শাটডাউন ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হবে। ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল, সরকার আবারও চলমান ‘সাধারণ ছুটি’ আরও তিন দিন বাড়িয়ে ১৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত করেছিল। ১০ এপ্রিল সরকার আবারও সরকারী এবং বেসরকারী অফিসের চলমান ছুটি ২৫ ই এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছিল যাতে এর বিস্তার না হয়। সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আগামী ৫ মে ২০২০ পর্যন্ত এই সাধারণ ছুটি সীমিত আকারে লকডাউন এবং সমস্ত গণপরিবহন সেবা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
তদুপরি, বাংলাদেশ সরকার সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর অধীনে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল যে সংক্রমণ পুরো দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় পুরো বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে (ডিজিএইচএস -১৬ এপ্রিল/২০)। সাধারণ মানুষ যদি নির্দেশাবলী অনুসরণ না করে তবে এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং এতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইতিমধ্যে সংবাদ-মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আইন অমান্য করার কারণে মোবাইল কোর্ট অনেককেই আর্থিক দণ্ড ও কারাদণ্ড দিয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার রোধে লোকদেরকে অবশ্যই বাড়িতে থাকতে হবে। একেবারে প্রয়োজনীয় বা জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কারও বাড়ীর বাহিরে যেতে পারবে না। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কেউ বাড়ি ছেড়ে বাহিরে যেতে পারবে না।
বিজ্ঞপ্তিটি পরিষ্কারভাবে বলছে যে, নতুন করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসাবে দেখা দিয়েছে, লক্ষ লক্ষ লোককে সংক্রামিত করেছে এবং জীবননাশ করেছে। ভারত সরকার ঘোষণা করেছে যে, কোভিড-১৯ কে “প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসাবে বিবেচনা করা উচিত”, যা অনুসরণ করে দুটি শোধনাগার, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি) এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি এন্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড (এমআরপিএল) ফোর্স মেজার ঘোষণা করে। চীনও তাই করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রচারের জন্য চীন কাউন্সিল দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ক্ষেত্রে ১৬০০ এরও বেশি ফোর্স ম্যাজিউর সার্টিফিকেট জারি করেছে।
চুক্তি আইনের অধীনে নৈরাশ্য/হতাশা মতবাদ (Doctrine of Frustration) ১৮৭২:
বাংলাদেশে চুক্তি আইন ১৮৭২ এর ধারা ৫৬ অনুযায়ী পরোক্ষভাবে বাংলাদেশে ফোর্স মেজার ঘোষণা দেওয়া যেতে পারে। এটি চুক্তির নৈরাশ্য/হতাশা মতবাদ সম্পর্কে বলেছে যে, কোন অসম্ভব কাজ করার জন্য চুক্তি এমনিতেই বাতিল। কোন কাজ করার জন্য একটি চুক্তি হওয়ার পরে সে কাজটি যদি বেআইনী হয়ে যায়, অথবা এমন কোন ঘটনার কারণে কাজটি অসম্ভব হয়ে যায় যে প্রতিশ্রুতিদাতা সেটি প্রতিরোধ করতে পারে নি, তখন সে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়। যেখানে একজন ব্যক্তি এমন কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা তিনি জানতেন, বা যুক্তিসঙ্গত প্রচেষ্টায় জানার সম্ভাবনা ছিল, যে কাজটি অসম্ভব বা বেআইনী, আর সেটা প্রতিশ্রুতিগ্রহীতা জানতেন না, তাহলে প্রতিশ্রুতিদাতা অবশ্যই প্রতিশ্রুতিগ্রহীতাকে ঐ প্রতিশ্রুতি পালন না করার কারণে ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিবেন। কোভিড -১৯ ফোর্স মেজার ক্লজ দ্বারা অন্তর্ভুক্ত হলে কী হবে? ফোর্স ম্যাজিউর ঘোষণা পুরো চুক্তিকে বাতিল করে দেবে? অবশ্যই না। বিশেষজ্ঞরা এই নীতি কে উভয় পক্ষকে চুক্তির দায়বদ্ধতার অংশটি থেকে সাময়িকভাবে রেহাই দেওয়ার জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসাবে দেখেন। কারণ সে ঘটনা তাদের যুক্তিসঙ্গত নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল ।
আপনার যদি কোনও ফোর্স মেজার ক্লজ মোকাবেলা করার দরকার হয়:
পক্ষগুলো তাদের চুক্তি পর্যালোচনা শুরু করতে পারে, পরীক্ষা করতে পারে ফোর্স মেজার বা নৈরাশ্য মতবাদ প্রয়োগ চুক্তির ধারা দ্বারা সমর্থিত কিনা, কিংবা এটি সম্প্রসারিত হতে পারে কি না? কোনও সরকারী বিধিনিষেধ বা ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা তাদের কার্য সম্পাদনে বাধা সৃষ্টি করেছে কিনা? ভবিষ্যতের ক্ষতির অনুমান করা এবং এই সিদ্ধান্তে আসা উচিত যে, ধারাটি প্রয়োগ করা হলে শেষ পর্যন্ত চুক্তি বাতিল হতে পারে কিনা বা এর সংশোধন প্রয়োজন কিনা? চুক্তিভিত্তিক অবস্থান বিবেচনা না করে কাজ করা একটি খারাপ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করতে পারে।
বিচারিক পদক্ষেপের নজির:
এখন আমরা সাম্প্রতিক দশকে বাংলাদেশ যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে, ICSID, বাংলাদেশ আদালত এবং ভারতীয় আদালতের মতামত আলোচনা করব।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) বনাম বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবং অন্যান্য, ২০১৭, মামলাতে ফোর্স ম্যাজিউর সম্পর্কে বর্ণনা করেছে যে, বিআরইবি চুক্তি থেকে নিজেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য “ফরসিয়েবিলিটি টেস্ট” পাস করতে পারেনি, যা পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে ফোর্স মেজার বলে ধারণা করা হয়েছিল। পরিস্থিতির পরিবর্তন বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির আওতায় ফোর্স মেজার বা চুক্তি আইনের অধীনে উত্তরকালীন অসম্ভবতা/ নৈরাশ্য বলে গণ্য হয়না। দাম বৃদ্ধিকে চুক্তি অনুযায়ী ফোর্স মেজার হিসাবে দাবি করা যায় না। একই প্রয়োগ এইচআরসি শিপিং লিঃ বনাম এমভি এক্স–প্রেস মানসলু, এমভি এক্স–প্রেস রিজল্ভ এবং অন্যান্য, ২০০৬ তেওপরিলক্ষিতহয়।
নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং বাপেক্স এন্ড পেট্রোবাংলা (ICSID কেস নং এআরবি /১০/১১ এবং এআরবি / ১০/১৮), ২০১৪ এর সালিস কার্যক্রমে ICSIDবলেছে যে, একটি প্রতিবন্ধকতাকে ফোর্স মেজার বিবেচনা করার জন্য একটি শর্ত হলো এটি “পূর্বানুমান করা যায় না”। চুক্তি পক্ষের মধ্যে নিয়ন্ত্রণকারী সুনির্দিষ্ট ধারা এবং যে পরিস্থিতিতে ফোর্স মেজার দাবি করা হয় উভয়টি একটি সাধারণ নীতিকে নিশ্চিত করে। সে নীতিটি হলো চুক্তি সমাপ্তির আগে যে ঘটনাগুলো চুক্তি পক্ষ জানে সেগুলো ফোর্স মেজার হিসাবে ধরা যাবেনা। কারণ, সেটা পুর্বানুমান যোগ্য। আর এগুলোকে চুক্তি পালন না করার জন্য কোন অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট এনার্জি ওয়াচডগ বনাম কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (২০১৭) মামলায় এরকম ফোর্স মেজার এর সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। কয়লার দাম বৃদ্ধিকে (ইন্দোনেশিয়ান আইন পরিবর্তনের কারণে) এমন ফোর্স মেজার ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে কিনা? এটি নির্দিষ্ট শক্তি-উত্পাদনকারী সংস্থা (টাটা ও আদানী) যেগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করছিল সেগুলোর প্রশ্ন ছিল। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, যে কয়লার দাম বাড়ানো ব্যতিরেকে যদি চুক্তির মৌলিক ভিত্তি অপরিবর্তিত থাকে এবং কোনও নৈরাশ্যের ঘটনা না ঘটে, তবে শুধু দামবৃদ্ধিকে ফোর্স ম্যাজিউর হিসেবে ধরা যাবে না। নাভা পাওয়ার লিমিটেড (এনপিএল) বনাম পাঞ্জাব স্টেট পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড (পিএসপিসিএল) এবং কাঞ্চন উদ্যোগ লিমিটেড বনাম ইউনাইটেড স্পিরিটস লিমিটেড– এ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট একই নীতি অনুসরণ করছিল।
পরিশেষে বলা যায় মহামারী অনিশ্চিত। তাই, যদি সরকার এবং সকল ব্যক্তিগত পক্ষগুলো বাংলাদেশে বিদ্যমান চুক্তির জন্য ফোর্স মেজার বা নৈরাশ্যের মতবাদ প্রয়োগ করতে পছন্দ করে, তাহলে তাদের জন্য যথাযথ গবেষণা শুরু করার ভাল উপায় হলো নোটিশ পদ্ধতিটি পরীক্ষা করা, স্ব-ঝুঁকি মূল্যায়ন শুরু করা, সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাপ করা, তাদের অপ্রত্যাশিত বোঝা কমানোর জন্য পারস্পরিক আলোচনা শুরু করা। প্রয়োজনে সংশোধন করে বাধ্যবাধকতা টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন হতে পারে, কেবল সমাপ্তি উত্তর নয়। এটি মনে রাখা দরকার যে, মহামারীটির বিস্তৃতির সাথে সাথে চুক্তির কার্য সম্পাদন কীভাবে বিলম্বিত হয় সেটার দলিল / প্রমাণ প্রস্তুত করতে হবে। আর সে পক্ষের ভালো উদ্দেশ্য এবং যুক্তি দেখানোর জন্য সরকারী সার্কুলার সমূহ সংগ্রহে রাখা যেতে পারে।
আমরা সরকারী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, বাংলাদেশে সমস্ত চুক্তি সম্পর্কিত আইনী প্রভাবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। পাশাপাশি বেসরকারী পক্ষগুলোর উচিত তাদের অসম্পূর্ণ চুক্তিগুলো পরীক্ষা করা। আমি বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশ সরকার যদি এই করোনা ভাইরাস জনিত মহামারীকে স্পষ্ট ভাবে ফোর্স ম্যাজিউর হিসাবে চিহ্নিত করে, তবে সেটা অদূর ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিবাদ ও মামলা-মোকদ্দমা হ্রাস করতে পারে।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপরোক্ত বক্তব্য একটি আইনী বিশ্লেষন ও শিক্ষামূলক। ইহা আইনি মতামত/পরামর্শ হিসেবে গ্রহণ না করে প্রয়োজনে শ্রম আইন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হলো)
লেখক: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
ইমেইল: bnn.mir@gmail.com