ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিক করতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার দুটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) প্রকল্প দুটি অনুমোদিত হয় বলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ও ভূমি সচিব মো. মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারী শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি ভবন থেকে সভায় অংশ নেন।
প্রকল্প দুটির একটি হলো ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প’। এটি চলতি মাস থেকে শুরু হবে। শেষ হবে ২০২৫ সালের জুন মাসে। এ প্রকল্পে বরাদ্দ এক হাজার ১৯৭ কোটি তিন লাখ টাকা। দ্বিতীয়টি ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়িত হলে প্রত্যাশিত সেবাগ্রহীতা ভূমি অফিসে না গিয়ে ঘরে বসে মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেবা পাবেন। হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা দেওয়া প্রকল্প দুটির মূল লক্ষ্য।
ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭টি বিভিন্ন ধরণের ভূমি সেবার প্রযুক্তিনির্ভর করা হবে। ই-মিউটেশন, রিভিউ ও আপীল মামলা ব্যবস্থাপনা, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর, রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা ব্যবস্থাপনা, মিউটেটেড খতিয়ান, ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড, মৌজা ম্যাপ ডেলিভারি সিস্টেম, মিস মামলা ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা, দেওয়ানি মামলা তথ্য ব্যবস্থাপনা, হাটবাজার ব্যবস্থাপনা, জলমহাল ব্যবস্থাপনা, বালু মহাল ব্যবস্থাপনা, চা-বাগান ব্যবস্থাপনা, ভিপি সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, ভূমি অধিগ্রহণ ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ বাজেট ব্যবস্থাপনা – ‘ল্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস ফ্রেমওয়ার্ক’ সিস্টেম সফটওয়্যারের মাধ্যমে একই কাঠামোয় নিয়ে আসা হবে। এর পাশাপাশি একটি আন্তঃপরিচালনযোগ্য ডেটাবেজ তৈরি করে সরকারের অন্যান্য সব সেবার সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
এ প্রকল্পটি সরাসরি ভূমি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পে স্যাটেলাইট ও ড্রোনের মাধ্যমে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপেক্ষাকৃত স্বল্প সময়ে, নির্ভুলভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করা হবে। তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া সারাদেশের ৪৭০টি উপজেলার মৌজা পর্যায়ে জিওডেটিক সার্ভের মাধ্যমে দুই লাখ ৬০ হাজার ৩১০টি জিও-রেফারেন্সিং পয়েন্ট নির্ধারণ করা হবে ও এক লাখ ৩৩ হাজার ১৮৮টি মৌজা ম্যাপের ডাটাবেজ প্রস্তুত করা হবে। এছাড়া, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় এসএ জরিপের পর আরএস জরিপ সম্পন্ন না হওয়ায় ওই দুটি জেলার ১৪ টি উপজেলায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে জরিপ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় নির্ধারিত জিও-রেফারেন্স-কৃত মৌজা ম্যাপ উপর্যুক্ত ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ প্রকল্পে সরবরাহ করা হবে।
এ প্রকল্পটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে।