ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

আইনজীবীদের বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিতে ভারতের বার কাউন্সিলকে সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ

মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্যান্য প্যারা লিগ্যাল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহের জন্য ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত আইনজীবীদের বিজ্ঞাপন দেওয়ার অনুমতি দিতে ভারতের বার কাউন্সিলকে নোটিশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

আজ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ নোটিশ দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আর সুভাস রেড্ডি ও বিচারপতি এএস বোপান্না।

লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আইনজীবীদের দুর্দশার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট চরণজিৎ চন্দরপাল।

আবেদন শুনানিতে আইনজীবী চরণজিৎ চন্দরপাল আদালতকে বলেন, করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় আইনজীবীদের উপার্জনও বন্ধ। পরিবারের চিকিৎসা ব্যয় বহনের সামর্থ নেই অনেকের। হতাশায় নিমজ্জিত আইনজীবী আত্মহত্যা করেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।

অ্যাডভোকেট অ্যাক্ট, ১৯৬১ অনুযায়ী, আইনজীবীদের জন্য কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে যা আইন পেশা ছাড়া অন্য কোন পেশায় নেই। একজন আইনজীবী চাকরি কিংবা ব্যবসায় যুক্ত হলে হলে সনদ রাখা থেকে বিরত থাকার বিধান রয়েছে। এছাড়াও আইনের ৩৫ ও ৪৯ অনুচ্ছেদে আইনজীবীদের বিজ্ঞাপন প্রদান ও সলিসিটিং কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এজন্য আবেদনকারী আইনজীবী আদালতের কাছে আইনের এসব বিধানগুলি শিথিল করে বিধি সংশোধন করতে বার কাউন্সিলের প্রতি নির্দেশনা চেয়েছেন।

আবেদনে কোন প্রতিষ্ঠানে আইনজীবীদের ‘নিষ্ক্রিয় অংশীদার’ ও ‘নিষ্ক্রিয় পরিচালক’ থাকা বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে এবং আইনের তৃতীয় অধ্যায়ের বিধি ২ স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে যাতে করে আইনজীবীরা কোন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে থাকতে পারেন।

চেম্বারে বসে কর কিংবা নিবন্ধন সম্পর্কিত পরামর্শমূলক কাজ করার জন্য আইনজীবী যেন সীমিত আকারে নির্দিষ্ট মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে পারে সে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

এছাড়াও আবেদনে আইনজীবীদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত বিকল্প আয়ের উৎস গ্রহণের অনুমতি চাওয়া হয়। তবে আগামী বছরের মার্চের পর এ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে না, আইনজীবীরা এমন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন।

বিধি সংশোধন করে কিংবা বর্তমান আইনের এসব ধারা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে আইনজীবীদের স্বার্থে এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে

পাশাপাশি এককালীন আর্থিক অনুদানে অভাবী আইনজীবীদের জন্য ত্রাণ সরবরাহের এই পদ্ধতি ফলপ্রসূ হবে না। আইনজীবীদের আর্থিক সমস্যার টেকসই সমাধান অনুসন্ধানের জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছেন অ্যাডভোকেট চরণজিৎ চন্দরপাল।

শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট নোটিশ উক্ত প্রেরণ করেন। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে বার কাউন্সিলকে উক্ত নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সূত্র: ইন্ডিয়া লিগ্যাল লাইভ ডটকম