হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করেছে সাড়ে ১২ হাজার হাসপাতাল

বেসরকারি ১২ হাজার ৫৪৩টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিবন্ধন (লাইসেন্স) নবায়নের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের সংখ্যা কত তা জানা নেই বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়।

আজ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এমন তথ্য উপস্থাপন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত এসব তথ্য আদালতে তুলে ধরেন।

পরে অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আমরা জানিয়েছি, কোভিড এবং নন কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা ও নাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ হয়েছে। বর্তমানে ১২ হাজার ৫৪৩টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে এবং এগুলোর নবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কোনো কোনোটির নবায়ন এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, আমরা আদালতকে জানিয়েছি বেসরাকারি লাইসেন্সধারী হাসপাতালগুলোর তালিকা সরকারের কাছে আছে। যেগুলোর কোনো লাইসেন্স নেই, সেগুলোর তালিকা নেই। সেগুলোর বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো অবহেলার ঘটনা ঘটলে, তার প্রতিকার প্রার্থনা করে স্বাস্থ্য বাতায়নে অভিযোগ দায়ের করা যায়। জনগণ যে কোনো সময় অভিযোগটি দায়ের করতে পারে। এ রিপোর্ট উপস্থাপনের শুনানি হয়েছে। এরপর আদালত এটিকে (রিট) আউট অব লিস্ট (কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন) করেছেন।

এর আগে, জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানিতে গত ৩১ আগস্ট বর্তমানে কতগুলো হাসপাতাল কোভিড ও নন-কোভিড হিসেবে আছে এবং বেসরকারি হাসপাতালের কতটির লাইসেন্স আছে, কতটির লাইসেন্স নেই, তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইশরাত হাসানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম এ রিট দাখিল করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।

এ রিট আবেদনে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিচলনার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতে চিকিৎসার অবহেলায় প্রত্যেক ভিকটিমকে ক্ষতিপূরণ দিতে এবং গাইডলাইন তৈরির কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

আবেদনে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য যথাযথ লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতালগুলোর নাম, সংখ্যা, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ওয়েসাইটে প্রকাশ, বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কিংবা অবৈধ ফি আরোপের বিষয়ে অভিযোগ দেওয়ার পদ্ধতি স্থাপন, অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ, যেসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করোনা টেস্ট করানো হয়, সেগুলোর তালিকা প্রকাশ, করোনা টেস্ট ও চিকিৎসার হাসপাতালগুলো মনিটরিংয়ে প্রত্যেক জেলা পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন, রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশ, রিজেন্টের প্রতারণার কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের থেকে নেওয়া ফি ক্ষতিপূরণসহ (২৫ হাজার টাকা করে) ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এর আগে ১৯ জুলাই বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশ চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন এ আইনজীবী। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।

ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে গত ৬ জুলাই রাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালের প্রধান শাখায় অভিযান পরিচালনা করেন। পরদিন হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র‌্যাব। গত ৭ জুলাই সন্ধ্যার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালের শাখা দু’টির (উত্তরা ও মিরপুর) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশের কথা বলা হয়। ওইদিন বিকেলে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয় র‌্যাব। পরে গ্রেফতারের পর গত ১৬ জুলাই সাহেদকে আদালতে হাজির করা হয়।