আদালত (প্রতীকী)
ভার্চুয়াল আদালত (প্রতীকী)

‘ধর্ষণের পর হত্যার শিকার’ কিশোরী জীবিত উদ্ধার: স্বীকারোক্তি দেয়া নৌকার মাঝির জামিন

নারায়ণগঞ্জে জীবিত ফিরে আসা কিশোরী জিসা মনিকে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’র পর নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া নৌকার মাঝি খলিলুর রহমান জামিন পেয়েছেন।

আজ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ওই আদেশ দেন। পাশাপাশি একই মামলার অপর আসামি আবদুল্লাহর জামিনের আবেদন শুনানির জন্য ৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওয়াজেদ আলী বলেন, আদালতে আসামিপক্ষ খলিলুরের জামিনের জন্য যুক্তি উপস্থাপন করে। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের আপত্তি জানায়। তবে আদালত শুনানি শেষে খলিলুরকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল লতিফ মিঞা বলেন, ‘শুনানিতে আমরা আদালতকে বলেছি, ভিকটিম জিসা জীবিত ফেরত এসেছে। সে বিয়ে করে ঘর-সংসার করছে। সে নৌকায় ওঠেনি, ধর্ষণ, হত্যা ও গুমের শিকারও হয়নি। তাই এর সঙ্গে কারও জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। তাই এই মামলা চলতে পারে না।

একই আদালতে আসামি আবদুল্লাহর পক্ষে তাঁর আইনজীবী রোকন উদ্দিন জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, আবদুল্লাহর জামিনের আবেদনের শুনানির জন্য ৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

ওই মামলার অপর আসামি রকিব কারাগারে আছেন। তিনি এর আগে গত সোমবার নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয়।

থানা-পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার বাসা থেকে নিখোঁজ হয় ১৫ বছর বয়সী জিসা মনি। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা জাহাঙ্গীর আলম সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা করেন। এতে পুলিশ অটোরিকশার চালক আবদুল্লাহ (২২), রকিব (১৯) ও নৌকার মাঝি খলিলকে (২৮) গ্রেপ্তার করে। আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তাঁরা বলেন, তাঁরা জিসাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন।

নিখোঁজের ৫১ দিন পর ২৩ আগস্ট ওই কিশোরী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরিবারের লোকজন পরদিন তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। ওই ঘটনায় পুলিশ সুপার (এসপি) দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এর একটি কমিটির তদন্তে অসদাচরণ ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত রোববার নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালত জিসা উদ্ধারের ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ও এসআই শামীমকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন।