দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে টাউট-দালাল নির্মূলে আইনজীবী, শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের প্রতি বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
সমিতির সহ-সভাপতি ও টাউট উচ্ছেদ কমিটির আহ্বায়ক মোঃ আবদুল জব্বার ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এখন থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যতীত অন্য কেউ বিচারপ্রার্থী মক্কেলের কাছ থেকে মামলা-মোকদ্দমা গ্রহণ/পরামর্শ প্রদান ও আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন না। সমিতির সদস্য ছাড়া অন্য কেউ এ কাজ করলে তিনি টাউট হিসেবে গণ্য হবে।
সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ও আইনজীবী সমিতি ভবনে অযথা ঘুরাঘুরি করা যাবে না উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশা পরিচালনার অনুমতিপ্রাপ্ত আইনজীবী ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে বিচারপ্রার্থীর পক্ষে অন্য কোন ক্লার্ক, মধ্য-স্বত্বভোগী, আইনের ছাত্র, শিক্ষানবীশ, আদালতের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং নিম্ন আদালতের প্র্যাকটিসের অনুমতিপ্রাপ্ত আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা গ্রহণ, পরিচালনা, আইনগত পরামর্শ প্রদান, মামলা সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট সমিতিতে অবস্থিত কোন কম্পিউটারের দোকানে আইনজীবীর উপস্থিতি ব্যতীত কম্পিউটার অপারেটর/ক্লার্ক বা অন্য কেউ কোন মামলার খসড়া (ড্রাফ্ট) করতে পারবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সকল সদস্যকে শুধুমাত্র নিবন্ধিত (রেজিস্টার্ড) আইনজীবী সহকারীর (ক্লার্ক) মাধ্যমেই সকল কারণিক কাজ সম্পাদনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রেজিস্টার্ড ক্লার্করা যেন সুপ্রিম কোর্ট ও সমিতির ভবনে সর্বাবস্থায় সুনির্দিষ্ট পোশাক ও আইডি কার্ড পরিধান করে স্ব-স্ব ক্লার্কের ক্ষেত্রে বিষয়টি আইনজীবীদের নিশ্চিত করবেন।
আইন পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখায় আইনজীবীরা সচেষ্ট থাকবেন উল্লেখ করে সমিতির সদস্যদের স্বশরীরে ওকালতনামা সংগ্রহ, ফাইলিং ও এফিডেভিট শাখায় গিয়ে পেশার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
শিক্ষানবিশদের প্রতি নির্দেশনা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য সনদ ও হাইকোর্টে তালিকাভুক্তির জন্য যে আইনজীবীরা যথাযথ আবেদনপত্র/ইন্টিমেশন বার কাউন্সিলে জমা দিয়েছে তারাই কেবল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ‘শিক্ষানবিশ’ হিসেবে বিবেচিত হবে।
শিক্ষানবিশরা যথাযথ ইন্টিমেশন জমা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কাছে আবেদন করে অনুমতি সাপেক্ষে সিনিয়র আইনজীবীর সাথে আর্টিক্যালশীপ (articleship) করবে। এক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের নির্ধারিত কোট পিন পরিধান করতে হবে। একইসঙ্গে শিক্ষানবিশদের সিনিয়রসহ সুপ্রিম কোর্টের সকল আইনজীবীদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী সহকারীদের প্রতি নির্দেশনা
কোন ক্লার্ক কোন বিচারপ্রার্থীর কাছ থেকে মামলা গ্রহণ, পরিচালনা, আইনগত পরামর্শ প্রদান ও মামলা সংক্রান্ত কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না।
সুপ্রিম কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে প্রত্যেক আইনজীবী সহকারীকে সর্বাবস্থায় সমিতির নির্ধারিত পোশাক পরিধান করতে হবে এবং পরিচয়পত্র সর্বদা প্রদর্শন করতে হবে। একই সাথে এক আইনজীবীর নিবন্ধিত ক্লার্ক অন্য আইনজীবীর কোন কারণিক কাজ পরিচালনা করতে পারবে না বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।