দেশের সীমান্ত এলাকাগুলোতে শিশুরা যাতে মাদক, চোরাচালান সংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (৭ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পাশপাশি চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বয়স ১৯ বছর দেখিয়ে চোরাচালানে জড়িয়ে আসামি করায় মামলার বাদী সিলেটের জৈন্তাপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মো. সাহাব উদ্দিন নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় আদালত তাকে ক্ষমা করে দেন। একই সঙ্গে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে এ মামলায় নিয়মিত হাজিরা থেকে অব্যাহতির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন- অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে বেআইনিভাবে মহিষ চুরির মামলায় সিলেটের জৈন্তাপুরে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীর বয়স ১৯ বছর দেখানোর ঘটনায় গত ২০ সেপ্টেম্বর বিজিবির সুবেদার নায়েব মো. সাহাব উদ্দিনকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিজিবির সেই নায়েব আদালতে হাজির হয়ে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীর বয়স ১৯ বছর দেখানোর ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে আদালত তাকে ক্ষমা করে দিয়ে বিজিবির প্রতি সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেন।
ওই শিশুসহ মামলার ১০ আসামিকে দেওয়া জামিনের আদেশটি বহাল রেখেছেন আদালত।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, মহিষ চুরি ও বিজিবির কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে একটি মামলা করে। সেই মামলায় ৫ নম্বর আসামি করা হয় চতুর্থ শ্রেণির এক শিশুকে। যেখানে তার বয়স দেখানো হয়েছে ১৯ বছর। এ মামলায় আগাম জামিনের জন্য এলে আদালত শিশুকে দেখে মামলার বাদীকে তলব করে আদেশ দেন। আজ মামলার বাদী হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আদালত তাকে ক্ষমা করে দেন। এছাড়া এ মামলায় শিশুকে নিয়মিত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, সিলেটের জৈন্তাপুরের খিলাতৈল এলাকার ব্যবসায়ী সাইদুল বেপারী বৈধভাবেই ২০টি মহিষ কিনে বাড়ি আনেন। কিন্তু বিজিবি সদস্যরা গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওই মহিষগুলো আটক করে নিয়ে যান। এরপর বিজিবির নায়েব সুবেদার সাহাব উদ্দিন জৈন্তাপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় আবিদুল, তার পিতা শফিক মিয়া, ভাই শামসুল হক, ভাবী রুনা বেগম, বোন শায়না বেগমসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৮/১০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলায় বলা হয়, আসামিরা ১৫টি মহিষ ছিনিয়ে নেয়। আসামিরা তাদের কাজে বাঁধা দান করে। এ অবস্থায় আবিদুলসহ ১০ জন হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। এরপর তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।