চার মাসের সাজার আপিল নিষ্পত্তি হয়নি ৪৯ বছরেও
উচ্চ আদালত

৩২ বছর ঝুলে থাকা সীমা হত্যা মামলা ৩ মাসে নিষ্পত্তি না করলে বিভাগীয় ব্যবস্থা

পুরান ঢাকার জগন্নাথ সাহা রোডে ১৯৮৮ সালের ২৬ এপ্রিল খুন হওয়া সীমা মোহাম্মদী (২০) হত্যা মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যদি মামলাটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেছেন আদালত।

একটি জাতীয় দৈনিকে চলতি বছরের ৬ অক্টোবর ‘৩২ বছর ঝুলে আছে সীমা হত্যার বিচার’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন বুধবার আদালতের নজরে আনার পর হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান ও জামিউল হক ফয়সাল।

পরে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের জানান, ৩২ বছর আগে ঢাকায় সীমা নামের এক মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আহমেদ নামের এক ছেলে তাকে হত্যা করে। এই মামলার ৩২ বছর ধরে শুনানি হচ্ছে না। ঢাকার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারি অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচার হচ্ছে।

আইনজীবী ইশরাত বলেন, এ পর্যন্ত ১১ বার বিচারক বদল হয়েছ। বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর ৩ মাস এর মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছন হাইকোর্ট। ব্যর্থ হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধর্ষণ প্রতিরোধে আদালতের নির্দেশনা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পুরান ঢাকার জগন্নাথ সাহা রোডে ১৯৮৮ সালের ২৬ এপ্রিল খুন হন সীমা মোহাম্মদী (২০)। বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত করে সীমাকে হত্যা করে মোহাম্মদ আহমদ ওরফে আমিন নামে এক যুবক। ঘটনার পরপরই ওই যুবকের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন সীমার মা ইজহার মোহাম্মদী। দুই মাস পর ২৫ জুন পলাতক আমিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে সীমাকে বিয়ে করতে না পেরে সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। আদালত থেকে আসামিকে হাজিরের জন্য ১৯৯৯ সালের ২২ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘২০০১ সালের ২৯ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের পরও সাক্ষ্য দিতে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের অনীহার কারণে মামলার বিচারকাজ বারবার পিছিয়ে যায়। অজামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের তৎকালীন প্রভাষক আনোয়ার হোসেন সাক্ষ্য দিতে অদ্যাবধি আদালতে হাজির হননি। ওই চিকিৎসককে এ পর্যন্ত অর্ধশত অজামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক চমন বেগম চৌধুরীর আদালতে বিচারাধীন।’