সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের (৩৫) হত্যাকারীদের পক্ষে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। তবে এ হত্যা মামলায় বাদীর পক্ষে রায়হানের পরিবারকে সর্বাত্মক আইনি সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
নগরের আখালিয়া এলাকার নেহারিপাড়ায় নিহত রায়হানের বাসায় শনিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফজলুল হক সেলিম এ কথা জানান। এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিষদের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো (বিএইচআরবি) সিলেট বিভাগীয় সভাপতি, সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মদ ফয়জুর রাহমান, জালালাবাদ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও বিএইচআরবি সিলেট জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান চৌধুরী এবং আইনজীবী-সাংবাদিক মুহাম্মদ তাজ উদ্দিনের যৌথ প্রচেষ্টায় এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
আইনজীবী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ তাজ উদ্দিনের উপস্থাপনায় মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান। নিহত রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন সমাজসেবী শওকত আলী।
এছাড়া অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী ও ব্লাস্টের সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী এবং সিলেট ল’ কলেজের অধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহসিন আহমদও বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর রাতে নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের শিকার হন রায়হান উদ্দিন। পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর রবিবার থেকে আকবর পলাতক।
মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশ পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়না তদন্ত করে।
রায়হানের হত্যার ঘটনায় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ-আন্দোলন হচ্ছে।
এর আগে সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের (এমসি) ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে প্রাইভেটকারের ভেতর তরুণীকে গণধর্ষণকারীদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াননি সিলেটের কোনো আইনজীবী। সেসময় আইনজীবীদের এমন সিদ্ধান্ত দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়।