সুযোগ হলে সাইকেলে চালিয়ে আদালতে আসবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামাল। কথা রেখেছেন তিনি। উচ্চ আদালতের এই বিচারক বাইসাইকেলে চড়ে কোর্টে এসেছেন।
আজ রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে তিনি সাইকেলে চড়ে কোর্টে প্রবেশ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক ও মাহফুজ বিন ইউসুফ।
এর আগে, গত ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের দক্ষিণ পাশে সাইকেল শেড উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাইকেলের জন্য সড়কে আলাদা লেন চালু করতে সরকারের প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছিলেন বিচারপতি আশরাফুল কামাল এবং নিজে সাইকেলে চড়ে কোর্টে আসবেন এমন ঘোষণাও দিয়েছিলেন।
বিচারপতি আশরাফুল কামাল সেদিন বলেছিলেন, সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব বাহন। এতে কোনো তেল খরচ হয় না। আমি নিজেও সাইকেলে কোর্টে আসতে চাই। চেষ্টা করছি শিগগিরই আমি একটা সাইকেল কিনে বাসা থেকে কোর্টে আসবো। আমরা মাঝে মাঝেই আসতে পারি, তাতে অসুবিধার কী।
এতে সরকারের জ্বালানি খরচ বাঁচবে, পরিবেশ সুন্দর হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বাসা থেকে এত গাড়ি নিয়ে যখন কোর্টে আসি তখন কিন্তু একটা যানজটেরও সৃষ্টি হয়। যেটা সামলানোও সাংঘাতিক।
বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে সাইকেলই নিরাপদ বাহন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে ডায়াবেটিস কমে যাবে, স্বাস্থ্য ভালো হবে, অসুখ-বিসুখ কমে যাবে, হাইপ্রেসার কমে যাবে। তাহলে কেন আমরা এটা করতে পারি না। নারীদের জন্য সাইকেলে অফিসযাত্রা আরও নিরাপদ এবং স্বাধীন বলেও মনে করেন এই বিচারপতি।
এসময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা সাইকেলের জন্য আলাদা লেন করার বিষয়টি সরকারকে জানান। সারা পৃথিবীতে এমন লেন আছে।’
সুপ্রিম কোর্ট যেটা করে সেটা বাংলাদেশ অনুসরণ করে। মানুষ সেটা গুরুত্বসহকারে পালন করে। এ কারণে সাইকেলিংয়ের এ উদ্যোগকে চালিয়ে নিতে বারের সকলের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
এরপর প্রতিষ্ঠা করা হয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের জন্য সাইক্লিং ক্লাব। ওই সাইক্লিং ক্লাবের উপদেষ্টা হলেন বিচারপতি আশরাফুল কামাল। আর সভাপতি ইমতিয়াজ ফারুক, সেক্রেটারি মাহফুজ বিন ইউসুফ ও জয়েন্ট সেক্রেটারি এম জামিউল হক ফয়সাল।
কথা রেখে সাইকেল চালিয়ে কোর্টে আসায় বিচারপতিকে স্বাগত জানান আইনজীবীরা। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম জামিউল হক ফয়সাল বলেন, ‘সাইকেলে করে হাইকোর্টে আসলেন বিচারপতি আশরাফুল কামাল মহোদয়। তিনি কথা দিয়েছিলেন, কথা রেখেছেন।’