প্রায় আড়াই বছর আগের ঘটনা। ২০১৮ সালের মে মাসে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের রাস্তায় সন্তান জন্ম দেন এক নারী। কিন্তু এ সময় মানসিকভাবে অসুস্থ ওই নারীর নাম-পরিচয় বলতে পারেননি কেউ।
শেষ পর্যন্ত কুমুদিনী হাসপাতাল এবং মির্জাপুর থানা পুলিশের মাধ্যমে মানসিক প্রতিবন্ধী অজ্ঞাতনামা ওই নারীকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। মির্জাপুর আমলি আদালতের তৎকালীন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার সুচিকিৎসার নির্দেশনা দিয়ে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
এরপর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক দীর্ঘ আড়াই বছর অজ্ঞাতনামা মহিলাকে ঢাকাস্থ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
শেষ পর্যন্ত কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনি তার নাম সঞ্চিতা এবং গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানায় বলে জানান। সেই সূত্র ধরে টাঙ্গাইল কারা কর্তৃপক্ষ ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানায় যোগাযোগ করে উথুরী গ্রামের ইউপি সদস্য সুবাহান কালার সাথে কথা বলে।
তার মাধ্যমে সঞ্চিতার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, সঞ্চিতার দুইজন প্রতিবেশী চাচা আশরাফুল ও মাহবুব, গফরগাঁও থানা পুলিশের একজন এএসআইসহ সংশ্লিষ্ট সকলে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) আদালতে উপস্থিত হন।
এ সময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন কর্মকারের আদালতে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সঞ্চিতা ও তার ২ চাচা।
শুনানি শেষে সঞ্চিতাকে অনতিবিলম্বে কারামুক্ত করার আদেশ প্রদান করা হলে বিকেলেই মুক্ত হন সঞ্চিতা। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ, সঞ্চিতার ২ চাচাসহ আদালতে উপস্থিত সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের জিআরও লাকী আক্তার ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।