দেশের ২১ জেলায় চালু হলো ডিজিটাল রেকর্ড রুম। ফলে এখন থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন এবং ফি জমা দিয়ে নির্ধারিত সময় এবং স্থান থেকে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি গ্রহণ করা যাবে।
আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে ২১ জেলায় ডিজিটাল রেকর্ড রুমের নাগরিক সেবা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা, ফরিদপুর, নরসিংদী, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও সিরাজগঞ্জে ডিজিটাল রেকর্ড রুম চালু করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
এ বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে পার্বত্য তিন জেলা ছাড়া বাকি ৪০ জেলার রেকর্ড রুমকে ডিজিটাল রেকর্ড রুম হিসেবে চালু করা হবে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে ৬১ জেলায় জেলা তথ্য সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে রেকর্ডরুমের সেবা প্রদান করা হতো। পরবর্তী সময়ে ৪টি জেলায় ইলেক্ট্রনিক ল্যান্ড রেকর্ড সিস্টেম (ইএলআরএস) চালু করা হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভূমি রেকর্ড ও মৌজা ম্যাপ ডিজিটাইজেশন প্রকল্পের মধ্যমে ৫৫টি জেলায় খতিয়ান ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
ওই প্রকল্পের ডাটা এন্ট্রির জন্য অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) থেকে ডিজিটাল রেকর্ড রুম (ডিআরআর) নামে সিস্টেম তৈরি করে দেয়া হয়। এছাড়াও ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের ব্যবস্থাপনায় ৬টি জেলার ৪৬টি উপজেলায় ডিজিটাল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (ডিএলএমএস) মাধ্যমে রেকর্ড ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম চালু করা হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের প্রকল্প দুটির মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এটুআই’র আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তায় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর আরএস-কে সিস্টেম তৈরি করে। এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর বর্তমানের জরিপ করা সব খতিয়ান অনলাইনে এন্ট্রি দিয়ে গেজেট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনে প্রকাশ করতে পারছে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয় এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও সিরাজগঞ্জ জেলার রেকর্ডরুমের ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক নাগরিক সেবা প্রদান কার্যক্রম চালু করেছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘পাইলটিং সফলভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় এবং নাগরিকের ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় আজকে ২১টি জেলার রেকর্ডরুমের সার্টিফাইড খতিয়ান দেয়ার নাগরিক সেবা কার্যক্রমটি ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে চালু করা হলো। এখন থেকে এই জেলাগুলোতে সকল প্রকার ম্যানুয়াল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
ডিজিটাল রেকর্ড রুম ব্যবস্থায় অনলাইনে আবেদন এবং অনলাইনে ফি দেয়ার মাধ্যমে নির্ধারিত সময় ও স্থান থেকে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি নেয়া যাবে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে সারাদেশে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ১১৩টি খতিয়ান অনলাইনে চূড়ান্তভাবে উন্মুক্ত করা হয়েছে। ইপর্চা, ল্যান্ড, ডিএলএসআর, মিনল্যান্ড এই চারটি ওয়েবসাইট বা জাতীয় তথ্য বাতায়নের সকল জেলা বাতায়নের ওয়েবসাইট থেকে নাগরিক অনলাইনে এই সেবাটি গ্রহণ করতে পারছে। ডিজিটাল রেকর্ড রুম কার্যক্রমের ভেন্ডর হিসেবে কারিগরি সহায়তা করেছে সফট বিডি লিমিটেড।’
এ সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারীসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।