দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যদের উদ্যোগে তলবী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সুষ্ঠু নির্বাচন ও সমিতির সদস্যদের মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে প্রচলিত প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সমিতির সদস্যবৃন্দের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আইনজীবীদের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্য কোন আইনজীবী সমিতির ভোটার হলে সুপ্রিম কোর্টের ওই সদস্য সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে অযোগ্য হবেন। অর্থাৎ অন্য আইনজীবী সমিতির ভোটার হলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি একটি হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবেন। কিন্তু তার আগে একাধিক আইনজীবী সমিতির সদস্যদের জন্য একটি বিকল্প (অপশন) রাখতে হবে। যাতে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে ভোটার হতে চান কিনা সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।
এজন্য তালিকা প্রস্তুতের আগে আইনজীবীদের একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিবে সমিতি। এই সময়ের মধ্যে সমিতির সদস্যকে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।
এছাড়াও সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রচলিত প্যানেল ভিত্তিক (সাদা ও নীল) নির্বাচন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, আমি বিশ্বাস করি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সুষ্ঠু নির্বাচন ও সমিতির সদস্যদের মর্যাদা রক্ষায় এসব সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
প্রচলিত প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, এই নিয়ম নতুন নয়। বরং বারের সংশোধিত নির্বাচন বিধি, ২০০১ এর বিধিবদ্ধ বিধান। কেবল নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা এসব সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার অনীক জানান, সমিতির গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতা অনুযায়ী এসব এখন বারের সিদ্ধান্ত হিসেবেই বিবেচিত হবে। ফলে সমিতি এসব সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য।
রাজনীতি মুক্ত নির্বাচন ব্যবস্থা সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীদের বহুদিনের প্রাণের দাবি উল্লেখ করে তলবী সভার অন্যতম উদ্যোক্তা সৈয়দ মামুন মাহবুব ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, সভায় উপস্থিত সাধারণ আইনজীবীদের মধ্যে ৯৯ ভাগ সদস্যই উপরোক্ত সংশোধনীর পক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন।
এসব সিদ্ধান্ত কারা বাস্তবায়ন করবে এবং কবে থেকে কার্যকর হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন থেকেই এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে। সমিতির বর্তমান কমিটি এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য একমত হলে তলবী সাধারণ সভা ডাকতে পারেন এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য একমত পোষণ করলে বারের গঠনতন্ত্রে এবং নির্বাচনী বিধিতে যৌক্তিক সংশোধনীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।