রংপুরের পীরগাছায় এক বাক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের পর জন্ম নেয়া শিশুকে স্বীকৃতিসহ ধর্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া সন্তানকে ওয়ারিশ ঘোষণাসহ সম্পত্তির ভাগ দেয়ারও আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক রোকনুজ্জামান রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে এ রায় দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত প্রতিবন্ধী নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তানকে আবুল কালামের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দেন ও তার ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির ভাগ দেয়ার আদেশ দেন। যদি তার কোনো সম্পদ না থাকে তাহলে রাষ্ট্রকে শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেন বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের বাক প্রতিবন্ধীকে নারীকে ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর প্রতিবেশী আব্দুল জলিলের ছেলে আবুল কালাম ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় প্রতিবন্ধী ওই নারী গর্ভবতী হয়ে পড়লে আবুল কালামকে দেখিয়ে দিয়ে ঘটনাটি ইশারায় স্বজনদের জানান।
পরে ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী।
এরপর ২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আবুল কালামকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন মেয়েটির বাবা। আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করে পীরগাছা থানা পুলিশ।
এরপর ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর এবং ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষা ও ১১ বছরে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার আবুল কালামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন বিচারক।
রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।