হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

পিকে হালদারের আইনজীবীর স্ত্রীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

পি কে হালদারের আয়কর আইনজীবী সুকুমার মৃধার স্ত্রী সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রিন্সিপাল অফিসার (অপারেশন) তাপসী রানী শিকদারকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারে জড়িত থাকার মামলায় তাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। অন্যদিকে তাপসী রানী শিকদারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আশফাকুর রহমান ভুলু।

এর আগে পিকে হালদারের আয়কর আইনজীবী সুকুমার মৃধা, তার স্ত্রী তাপসী রানী শিকদার, কন্যা অনিন্দিতা মৃধাসহ পাঁচ জনকে আসামি করে দুদকের উপপরিচালক সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। অবৈধ ব্যবসা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ২০ কোটি ৭০ লাখ ৮ হাজার ৮৫০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহার মতে, সুকুমার মৃধা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ভারতের পশ্চিম বঙ্গের ১৪ পরগণার অশোক নগরে তার নিজ নামে এবং স্ত্রী তাপসী রানী শিকদারের একক ও যৌথ নামে প্রায় ৪০ শতক জমি কেনেন। তাছাড়া পশ্চিম বঙ্গের অশোক নগরে তার কেনা জমিতে দুই তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত অর্থ নিকটবর্তী দেশ ভারতের পশ্চিম বঙ্গে পাচারের ক্ষেত্রে সুকুমার মৃধার ভাগ্নে স্বপন কুমার মিস্ত্রি প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে জানা যায়।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে, তার স্ত্রী তাপসী রানী শিকদার সোনালী ব্যাংক লিমিটেডে কর্মরত থাকাবস্থায় সরকারের পূর্বানুমোদন ছাড়াই ভারতের নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন। তাছাড়া সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিত মৃধারও রয়েছে দ্বৈত নাগরিকত্ব।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে হালদার) হালদারের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে পি কে হালদারের সহযোগী সন্দেহজনক ৮৩ ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ আছে বলে হাইকোর্টকে জানায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। হাইকোর্টে দাখিল করা বিএফআইইউর প্রতিবেদনে পি কে হালদার ও তার ৮৩ সহযোগী এবং ৪৩টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দিয়ে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের বিস্তারিত তথ্যও উঠে এসেছে। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ইতিমধ্যে ফ্রিজ অবস্থায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।