পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এ কে এম এ আউয়ালের স্ত্রী লায়লা পারভীনকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিচারিক (নিম্ন) আদালতের দেয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতের আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও দুদকের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম।
বিচারিক আদালতের দেয়া জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৫ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আদালতে আজ দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আমিন উদ্দিন মানিক ও দুদক আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম গণমাধ্যমকে জানান, দুদকের মামলায় বিচারিক (নিম্ন) আদালত থেকে ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর জামিন পেয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়ালের স্ত্রী লায়লা পারভীন। সেই জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে আদালত তার জামিন বাতিল প্রশ্নে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক আলী আকবর বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। আউয়ালের বিরুদ্ধে ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫৫ টাকা এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার ৫০ টাকা অবৈধ সম্পদের উল্লেখ করে মামলা দুটি করা হয়।
প্রথম মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক এমপি আউয়াল অবৈধভাবে ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫৫ টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তবে তিনি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদের বিবরণীতে ১৫ কোটি ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৪৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
দ্বিতীয় মামলার অভিযোগে বলা হয়, তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার ৫০ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিকানার তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী এর সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। বর্ণিত সম্পদ অর্জন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন লায়লা।
ওই মামলায় গত ৩ নভেম্বর লায়লা পারভীন বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন করলে ১৬ নভেম্বর শুনানির দিন ঠিক করেন আদালত। নির্ধারিত দিনে শুনানি নিয়ে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, আউয়াল ২০০৮-২০১৪ সালে পরপর দুবার পিরোজপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।