রাজধানীর দক্ষিণখানে মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে পোশাককর্মী আজহারুলের (৪০) অর্ধগলিত সাত টুকরো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতের স্ত্রীসহ দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া দু’জন হলেন- স্ত্রী আসমা ও তার পরকীয়া প্রেমিক দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান (৬৫)।
২৬ মে (বুধবার) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনুজ কুমার সরকার আসামিদের আদালত হাজির করে মামলার তদন্ত স্বার্থে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২৫ মে (মঙ্গলবার) রাতে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে আসামিকে আসমাকে গ্রেফতার দেখনো হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, নিহত আজহারুল পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। তিনি দক্ষিণখানের মধুবাগ এলাকার ইউসুফ গাজীর ৩৯ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন। নিকটস্থ সরদার বাড়ি জামে মসজিদে প্রায় ৩৩ বছর ধরে ইমামতি করে আসছেন আব্দুর রহমান। আজহারের ছেলে আরিয়ান ওই মসজিদের মক্তবে পড়ালেখা করতো। আজহার নিজেও আব্দুর রহমানের কাছে কোরআন শিক্ষা নিতেন। এতে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাদে ওই আসমার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান ইমাম আব্দুর রহমান।
বিগত এক বছর পরকীয়ার সম্পর্ক চলার পর বিষয়টি টের পান আজহারুল। এ অবস্থায় গত ১৯ মে রাতে দক্ষিণখানের সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ইমামের কক্ষে গিয়ে এ বিষয়ে তার কাছ জানতে চান আজহার। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডাও হয়। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আজহারকে ছুরি দিয়ে হত্যা করেন আব্দুর রহমান। এরপর ছুরি ও রাম দা দিয়ে মরদেহ টুকরো টুকরো করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে ফেলেন তিনি।
আজহার নিখোঁজ থাকার খবর পেয়ে র্যাব অনুসন্ধান শুরু করে। গত ২৪ মে মসজিদের সিঁড়িতে রক্তের দাগ ও সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার তথ্য পায় র্যাব।
পরে র্যাব ইমাম আব্দুর রহমানকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা জানতে পারে। এসময় তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি চাকু উদ্ধার করা হয়।