খুলনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সুনন্দ বাগচীর স্বাক্ষর জাল করে কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদক কার্যালয়ে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই আদালতের দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুদকের খুলনার উপপরিচালক মো. নাজমুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৩১ মে মামলাটি করেছি। এরই মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জারিকারক (প্রসেস সার্ভার) এমএম নাহিদুল ইসলাম ও মো. নাজমুল হাসান।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা গেছে, বিচারক সুনন্দ বাগচীর স্বাক্ষর জাল করে আদালতের জারিকারক এমএম নাহিদুল ইসলাম ও মো. নাজমুল হাসান ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে খুলনা বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করতেন।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আনুষঙ্গিক খাতে বরাদ্দ না থাকা সত্ত্বেও বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় বিল ছাড়িয়ে নেন তারা। ওই বিলে ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত এক কোটি দুই লাখ ২৪ হাজার ৪০ টাকা তোলেন।
ওই টাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নামীয় খুলনার খানজাহান আলী রোডের জনতা ব্যাংক লিমিটেডের শাখায় জমা হয়। এরপর নাহিদুল ইসলাম ও নাজমুল হাসান বিচারক সুনন্দ বাগচীর স্বাক্ষর জাল করে কার্যালয়ের ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপকের বরাবর জমা দিয়েছিলেন। ওই পত্রে একই ব্যাংকের পৃথক দুটি হিসাব নম্বরে টাকা জমা দেওয়ার অনুরোধ করেন দুই আসামি। জনতা ব্যাংক শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চিঠি যাচাই না করে ও হিসাবধারীকে ফোনে না জানিয়ে ভুয়া পত্রের ফটোকপির ওপর ভিত্তি করে আসামিদের ব্যক্তিগত হিসাবে টাকা পাঠিয়ে দেন। আসামিরা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের চেকের মাধ্যমে সরকারি অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেন।
মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. নাজমুল হাসান বলেন, আসামিরা কৌশলে আদালতের বিচারক সুনন্দ বাগচীর স্বাক্ষর জাল কিংবা স্ক্যান করেন। এরপর ব্যাংকেও ভুয়া স্মারকের মাধ্যমে নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করান। সর্বমোট সরকারি এক কোটি দুই লাখ ২৪ হাজার ৪০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।