খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, মানবপাচার, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে করা অর্ধশত গায়েবি মামলার বাদী খুঁজে বের করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রতি নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানি আজ। সে হিসেবে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কজলিস্টে (কার্যতালিকা) রয়েছে।
১৪ জুন (সোমবার) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য রয়েছে।
এর আগে গত ৮ জুন (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চে রিটটির শুনানি করা হবে বলে আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিতায় রিট শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টের কজলিস্টে উঠেছে।
রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে হওয়া মামলায় বাদীর খুঁজে না পেয়ে এর আগে গত ৭ জুন (সোমবার) এর প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পক্ষে আইনজীবী এমাদুল হক বসির রিট আবেদন করেন। আবেদনে মামলার ভুয়া বাদীদের খুঁজে বের করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (এসবি), অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (সিআইডি), মহাপরিচালক র্যাব ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ ৪০ জনকে বিবাদী করা হয়।
রিটে বলা হয়, রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি ও মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। কিন্তু একটি মামলারও বাদী খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ বিবেচনায় অনেক মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। তারপরও তার বিরুদ্ধে এভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করায় তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এসব মামলায় এক হাজার ৪৬৫ দিন জেলও খেটেছেন একরামুল।
এ পর্যন্ত ৪৯টি মামলা হয়েছে দাবি করে রিটকারী একরামুল আহসান কাঞ্চন বলেন, ‘হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মানবপাচারের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধের অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এমন কোনো অভিযোগ নেই, যা আমার ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব মামলার বাদীদের খুঁজে পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব মামলায় দীর্ঘদিন জেলও খেটেছি। এর মধ্যে অনেক মামলায় আদালত বাদী খুঁজে না পাওয়ায় খালাস পেয়েছি। এখন ক্ষতিপূরণ চেয়ে এবং মামলার বাদী খুঁজে বের করতে নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছি।’
রিটে বাদীর অস্তিত্ব বের করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত একরামুল আহসান কাঞ্চনের ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।