আড়াই টাকা অনিয়মের দায়ে ১৯৮২ সালে কুষ্টিয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তার দণ্ডের বিষয়ে আগামীকাল সোমবার (২৮ জুন) রিভিউ আদেশের দিন ধার্য করেছেন আদালত। গত ২৪ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে সোমবার আদেশ দেয়ার জন্য দিন নির্ধারণ করে আদেশ দেন।
আদালতে ওই দিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকনের পক্ষে শুনানি করেন প্রবীর নিয়োগী।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকন কুষ্টিয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে পাট সম্প্রসারণ সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি চাকরিতে যোগ দেন ১৯৭৪ সালে। এর মধ্যে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি সরকারের কাছ থেকে পুরস্কারও পান। কিন্তু এরই মাঝে ঘটে বিপত্তি, চাকরির সময় পাঁচ প্যাকেট পাটের বিজ বিক্রিতে আড়াই টাকা অর্থাৎ প্রতি প্যাকেটে ৫০ পয়সা করে বেশি নিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন এক ব্যক্তি।
১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনামলে সেই অনিয়মের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগে তাকে (বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকন) দুই মাসের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা দেয়া হয়। ওই আদেশের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। চাকরি ফিরে পেতে চেষ্টা-তদবির করেও তা না পেয়ে ওই ঘটনায় ২০১২ সালে রিট আবেদন করেন হাইকোর্টে।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে সাজার বিষয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ ওই ব্যক্তিকে তার উপযুক্ত বা প্রকৃত পদে বহাল করে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়াসহ চাকরিতে পূর্ণ বহালের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ১৯৮২ সালে তৎকালীন সামরিক শাসনামলের সেই অনিয়মের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগে তাকে (বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকন) দুই মাসের দণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। হাইকোর্টে তার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার নাসিমা আক্তার চৌধুরী।
পরে ২০১৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আপিল আবেদন খারিজ করেন। ফলে ওই ব্যক্তিকে তার (পাট সম্প্রসারণ সহকারী হিসেবে) উপযুক্ত বা প্রকৃত পদে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়াসহ চাকরিতে পুনর্বহাল আদেশ আপিলেও থাকে। তবে ১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সরকারের সামরিক শাসনামলে সেই দুই মাসের দণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা অবৈধ করে দেয়া রায় আংশিক সংশোধন করা হয়।
সুত্র- জাগো নিউজ