আড়াই টাকা অনিয়মের দায়ে ১৯৮২ সালে কুষ্টিয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকনকে দণ্ড দেয়া হয়। এরপর আবেদন প্রেক্ষিতে তার চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার আদেশ দেন হাইকোর্ট। এই আদেশের বিরুদ্ধে করা রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অদিফতরের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে রিভিউ রায়ে অবশেষে প্রায় ৪০ বছর হারানো চাকরি জীবনের সব বেতন-ভাতা পাবেন ওবায়দুল আলম।
সোমবার (২৮ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ ওবায়দুল আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মুহাম্মদ মোর্শেদ।
এর আগে গত ২৪ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ সোমবার আদেশের দিন ধার্য করেন আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আদেশ দেয়া হলো।
আদালতে ওই দিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল আলম আকনের পক্ষে শুনানি করেন প্রবীর নিয়োগী।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল আলম আকন কুষ্টিয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে পাট সম্প্রসারণ সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি চাকরিতে যোগ দেন ১৯৭৪ সালে। এর মধ্যে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারের কাছ থেকে পুরস্কারও পান তিনি। কিন্তু এরই মাঝে ঘটে বিপত্তি। চাকরির সময় পাঁচ প্যাকেট পাটের বিজ বিক্রিতে আড়াই টাকা, অর্থাৎ প্রতি প্যাকেটে ৫০ পয়সা করে বেশি নিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন এক ব্যক্তি।
১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনামলে সেই অনিয়মের ঘটনায় করা অভিযোগে ওবায়দুল আলমকে দুই মাসের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই আদেশের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। চাকরি ফিরে পেতে চেষ্টা-তদবির করেও তা না পেয়ে তিনি ওই ঘটনায় ২০১২ সালে রিট আবেদন করেন হাইকোর্টে।
সুত্র- জাগো নিউজ