আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ধর্ষণ মামলায় ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির চরিত্র নিয়ে ‘নেতিবাচক’ মন্তব্যের বিধান আইন থেকে বাদ যাচ্ছে। এ ধরনের বিধান বাদ দেওয়াসহ বিদ্যমান সাক্ষ্য আইন সংশোধন করে সংসদের আগামী অধিবেশনে তোলা হবে বলে জানান তিনি।
বুধবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে আইনমনন্ত্রী এ তথ্য জানান। এর আগে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সদস্যরা ছাঁটাই প্রস্তাবেরও পর তাদের বক্তব্য দেন। এ সময় জাপার সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানসহ একাধিক সংসদ সদস্য সাক্ষ্য আইনটিকে যুগোপযোগী করার প্রস্তাব তোলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধরায়, এখানে রেইপ কেইসে ভিকটিমের চরিত্র নিয়ে কথা বলার একটা সাব সেকশন আছে। সেটাকেও পরিবর্তন করার জন্য আমি নির্দেশনা পেয়েছি। সেটাও পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা মনে হয় পূর্ণাঙ্গভাবে সেপ্টেম্বরে যে সংসদ অধিবেশন হবে সেখানে আইনটি নিয়ে আসতে পারব।’
সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-এর ১৫৫(৪) ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার বা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন, তখন অভিযোগকারীকে সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা দেখানোর সুযোগ রয়েছে।
সাক্ষ্য আইনে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার যুক্ত করা হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘সাক্ষ্য আইনের কথা বলা হয়েছে। এখানে একটু বলে রাখি। অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট যুগোপযোগী করার জন্য কাজ চলছে। আমার মনে হয় আগামী সংসদে আমরা এটা আনতে পারব। বিশেষ করে এটা হবে ভার্চুয়াল।
সাক্ষ্য আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাক্ষ্য আইনে ভার্চুয়াল ট্রায়াল করার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী কাশিমপুর এবং কেরানীগঞ্জ জেলে আদালত যাতে ওখান থেকে ভার্চুয়ালি করতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এখন আইনের পরিবর্তন করে এই সাক্ষ্য আইনে পরিবর্তন করার কাজ করছি।’
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের অভিযোগে সাধারণত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়। গত নভেম্বর মাসে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে সরকার। সেখানে ‘ধর্ষিতা’ শব্দটি বদলে ‘ধর্ষণের শিকার’ শব্দ দুটি বসানো হয়। এছাড়া ধর্ষণের অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রাখা হয়। সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারা সংশোধনের বিষয়ে অধিকারকর্মীদের দাবি দীর্ঘদিনের।