হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সুতাং নদী ও শৈলজুড়া খাল দূষণকে কেন সংবিধানবিরোধী ঘোষণা করা হবে না এ বিষয়ে জানতে রুল দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ রুল জারি করা হয়।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এর আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকসহ নয়জন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বেলা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সুতাং নদী ও নদীর সঙ্গে সংযুক্ত শৈলজুড়া খালকে রক্ষায় বিবাদীগণের ব্যর্থতাকে কেন সংবিধানবিরোধী, বেআইনী, আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবে না এবং সুতাং নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা করা হবে না ও পানি, বায়ু, মাটি এবং শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ প্রদান করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিবাদীগণের উপর রুল জারি করেছেন আদালত।
সেই সঙ্গে ১২টি শিল্প কারখানায় বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ স্থাপনা (ইটিপি) ও অন্যান্য দূষণ নিরোধক যন্ত্র নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালনা করতে, পরিবেশগত ছাড়পত্রের পরিপূর্ণ অনুসরণ না করা পর্যন্ত ছাড়পত্র স্থগিত ও দুই মাস অন্তর সুতাং নদী ও নদীর সঙ্গে সংযুক্ত শৈলজুড়া খালের পানি পরীক্ষা করে তিন মাস অন্তর প্রতিবেদন দাখিল করতে একটি স্বাধীন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
বেলার মামলায় উল্লেখ করা হয়, হবিগঞ্জের সুতাং নদী দেশের অন্যতম একটি নদী। এ নদীর অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। দখল, দূষণ, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ নদীবিরুদ্ধ বহুমুখী ব্যবহারে এ নদীর অস্তিত্ব আজ সংকটাপন্ন।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ওলিপুরে স্থানে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানার বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে সুতাং নদী। অব্যাহত শিল্পবর্জ্যরে দূষণে নদীটির পানি কালো বর্ণ ধারণ করেছে, পানি থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, কষ্টকর হয়ে পড়েছে নদীর পাড় দিয়ে চলাচল এবং দূষণের কারণে মৎস্যশূন্য হয়ে পড়েছে নদীটি। দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী নদী দখল ও দূষণমুক্ত রেখে যথাযথ সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ব্যর্থ।
মামলার বিবাদীরা হলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পানি সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক এবং প্রাণ, আরএফএল গ্রুপ, স্কয়ার ডেনিম লিমিটেড; পাইওনিয়ার ডেনিম লিমিটেড, সিলভান এগ্রিকালচার লিমিটেড, স্টার পোরসেলিন লিমিটেড, হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেড; হবিগঞ্জ টেক্সটাইল লিমিটেড, রংপুর মেটাল ইন্ডস্ট্রিজ লিমিটেড; মেইজ এডভান্স এগ্রো রিফাইনারিস (মার) লিমিটেড; সায়হামনীট কম্পোজিট লিমিটেড; সান বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেড; গ্লোরী এগ্রো লিমিটেড ও এবং রাসা কেমিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।