ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে সরকারি কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করতে হলে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে—সরকারি চাকরি আইনের এমন বিধান কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।
২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ও ৩ ধারার বৈধতা নিয়ে কুড়িগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিটটি করেন। ৩ ধারায় আইনের প্রাধান্য বিষয়ে এবং ৪১ ধারায় ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত কর্মচারীর ক্ষেত্রে ব্যবস্থাদি সম্পর্কে বলা আছে।
আইনের ৪১ (১) ধারা বলছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আজিজুর রহমান দুলু, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আরিফুল অনলাইন গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি। গত বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে তাঁকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। তখন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাদকবিরোধী অভিযানে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ৪৫০ গ্রাম দেশি মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা পাওয়ায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে আরিফুল জামিনে মুক্তি পেয়ে কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা, এস এম রাহাতুল ইসলামসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
রুলে ফৌজদারি মামলা থাকা কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন না করতে যথাযথ নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালে সহকারী কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।