জাল দলিলের মাধ্যমে সরকারি জমিসহ বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলা বাতিলে রায় প্রত্যাহার সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
কাজী ফিরোজ রশীদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে কাজী ফিরোজ রশীদের পক্ষে ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান।
২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক জুলফিকার আলী বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলাটি করেন। এরপর ২০১৫ সালের গত ৯ আগস্ট ফিরোজ রশীদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাজধানীর ৯/এ ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডে এক বিঘা সরকারি জমিসহ বাড়িটি (প্লট নম্বর ১০, বাড়ি নম্বর ৬৫) ফিরোজ রশীদ জাল দলিলের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক জুলফিকার আলী বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করেন।
ফিরোজ রশীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘দুদক (সংশোধন) আইন ২০১৬’ এর ধারা ৮ এর বিধান অনুযায়ী উক্ত মামলা তদন্তের এখতিয়ার দুদকের নেই। তা সত্ত্বেও দুদক মামলাটি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেনি। এ ব্যাপারে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা ও মামলাটি তদন্তের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের আদেশ চেয়ে ফিরোজ রশীদ ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
শুনানি শেষে আদালত ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর রুল জারি করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও কে. এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রুল যথাযথ ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে ওই রুল গ্রহণ করে দুদকের মামলা এখতিয়ারবহির্ভূত ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে রায়ের পর দুদক ওই মামলায় চার্জশিট দেয়। এতে দুদকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেন ফিরোজ রশিদ। অপরদিকে দুদক ওই রায় প্রত্যাহার চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে।
হাইকোর্ট দুদকের আবেদন শুনানি না করে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করতে বলেন। এরপর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি রায় প্রদানকারী বেঞ্চে পাঠান।
হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ বিষয়টি শুনানি করে রায় প্রত্যাহার করেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টের ওই প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন কাজী ফিরোজ রশিদ। যা আজ শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ছিল।