কপিরাইট আইন ২০২১-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। নতুন করে এ আইনে লোকসংস্কৃতি, নৈতিক অধিকারসহ আরও কিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া মন্ত্রীরা সচিবালয় থেকে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি জানান, কপিরাইট আইন ২০২১-এর খসড়ায় অজ্ঞাতনামা বা ছদ্মনামের স্বত্বাধিকারী, ডাটাবেইজড, নৈতিক অধিকার, পাবলিক ডোমেইন, ফটোগ্রাফ প্রোডিউসার, লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কপিরাইট আইন ২০০২-এ কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে নতুন অনেকগুলো সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কারণ আগে অনেক কিছুই ছিল না।
তিনি বলেন, কোনও কিছু প্রথম প্রকাশ হওয়ার পর ৬০ বছর পর্যন্ত এর কপিরাইট থাকবে। এ ক্ষেত্রে স্বত্বাধিকারী যদি মারাও যান তাহলে প্রথম দিন থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত স্বত্বাধিকার পাবেন। অবৈধ সম্প্রচার বন্ধে কপিরাইট রেজিস্ট্রারকে অবহিত করলে তিনি সেটি বন্ধের ব্যবস্থা করবেন। লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতি রক্ষার জন্য এ সংক্রান্ত একটি অধ্যায় এখানে যুক্ত করা হয়েছে, যেটা আগে ছিল না। একইসঙ্গে শাস্তি ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এ আইনের ৮০, ৯৩ ও ৯৪ ধারায়।
কেবিনেট সচিব জানান, ৬০ বছর পর মেধাস্বত্ব থাকবে না। সকলের জন্য তা উন্মুক্ত হয়ে যাবে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ধরুন একজন গান গাইলো সে গানের স্বত্বাধিকার তার। ৬০ বছর আগে যদি অন্য কেউ সেই গান গায় তাহলে তাকে আইনানুযায়ী টাকা দিতে হবে। যদি তিনি এ গানের অনুমতি দিয়ে না থাকেন। ৬০ বছর পর আর এগুলো লাগবে না।
এ আইনে শাস্তির ধরন সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শাস্তির জন্য তিনটি ধারা রয়েছে। এখানে অনেকগুলো বিষয়ে শাস্তি আছে। প্রতিটা বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা শাস্তির বর্ণনা করা হয়েছে আইনে।
‘যেমন, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কপিরাইট বিদ্যমান রয়েছে এমন কোনও কর্মের অধিকার লঙ্ঘনকারীর অনুলিপি তৈরি করেন তাহলে অনূর্ধ্ব দুই লাখ টাকা অথবা দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। আর কম্পিউটার বা ডিজিটাল বা অন্যকোনও যন্ত্র ব্যবহার করে যদি তা হয় তাহলে ২৫ হাজার টাকা অথবা তিন মাসের কারাদণ্ড। আবার কোনও ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠান যদি এমন কিছু করে তাহলে অনূর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এরকম ১৫ থেকে ১৬টা শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।