বিদায় নিয়েছে ২০২১। নতুন বছর ২০২২ বরণপূর্বক পুরনোকে ভুলে নব সূচনা হয়েছে সকল ক্ষেত্রে। তবে পুরনো বলে সব কিছু ফেলে আসার সুযোগ ক্ষেত্রবিশেষে নেই। ২০২১ শুধু বছর হিসেবে বিদায় নেয়নি, নিয়ে গেছে প্রখ্যাত ছয় আইনজীবীকেও। খ্যাতিমান এসব আইনজীবীর প্রয়াণ আইনাঙ্গনে নামিয়েছে শোকের ছায়া। প্রথিতযশা সেইসব আইনজীবীদের নিয়ে সালতামামির শোক পর্ব সাজানো হয়েছে।
আবদুল বাসেত মজুমদার
গত ২৭ অক্টোবর বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মৃত্যুকালে দুই ছেলে, দুই মেয়ে, আত্মীয় স্বজন ও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন তিনি।
মওদুদ আহমদ
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও প্রথিতযশা আইনজীবী মওদুদ আহমদ ১৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দেশের উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক আইনমন্ত্রী ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। বর্ণাঢ্য রাজনীতিক জীবনের অধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মওদুদ আহমেদ মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আবদুল মতিন খসরু
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী, কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন খসরু করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ এপ্রিল ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করা মতিন খসরু ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
পরিমল চন্দ্র গুহ
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ফাইন্যান্স কমিটি ও হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিমল চন্দ্র গুহ (পি সি গুহ) গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
জেয়াদ আল মালুম
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা জেয়াদ আল মালুম গত ২৬ জুন দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
জিয়াউর রহমান খান
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জিয়াউর রহমান খান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ এপ্রিল রাত ১০টায় রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। জিয়াউর রহমান খানের বাবা আতাউর রহমান খান ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী ও ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
উল্লেখ্য, বিখ্যাত এই ছয় আইনজীবী ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকজন আইনজীবী মৃত্যুবরণ করেছেন ২০২১ সালে। এছাড়া সহকর্মী হারানোর বেদনায় ভেসেছে জেলা আইনজীবী সমিতিগুলোও। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইনজীবী মারা গেছেন ঢাকার অধস্তন আদালতের। ২০২১ সালের প্রথম চার মাসেই ঢাকা আইনজীবী সমিতির ৩২ জন সদস্য মারা গেছেন।