পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নরসিংদীতে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবীসহ প্রতিপক্ষের হামলায় মোট ছয়জন আহত হয়েছেন। সমিতির তিন সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ভোট দিতে গিয়ে হামলার শিকার আইনজীবীরা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সোহেল মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ইশতিয়াক আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু সায়েম।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (৫ জানুয়ারি) সমিতির পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের ওই তিনজন আইনজীবী তাঁদের নিজ এলাকা যথাক্রমে শিবপুর উপজেলার সধারচর ইউনিয়ন ও বেলাব উপজেলার বাজনাবো ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট দিতে যান। এ সময় প্রতিপক্ষ দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন।
সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর ওপর কাপুরুষোচিত এ মামলা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক এবং গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ উল্লেখ করে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার কাজল ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
জানা গেছে, বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতির পাশাপাশি বেড়েছে সংঘর্ষের ঘটনা। সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৬ জনের আহতের খবর পাওয়া গেছে।
বেলা ১২টার দিকে শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নে সীলমারাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ৬ জন আহত হন। একই সময়ে বাঘাব ইউনিয়নে বহিরাগতদের প্রবেশকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করা হয়েছে ৪টি বাস। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে জোরপূর্বক ব্যালটে সিল (চেয়ারম্যান-মেম্বার) মারাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পর দুপুর ১টার দিকে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মৌলভী তোফাজ্জল হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ে নৌকায় সিল মারাকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ।
পুটিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান কাউসার জানান, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকলেও তা পুনরায় চালু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পঞ্চম ধাপে নরসিংদীর শিবপুরের ৭টি ও বেলাব উপজেলার ৮টিসহ মোট ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচন অফিস বলছে, জেলায় মোট ১৫টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৯৫ জন, সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৫২৭ জন ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের সদস্য পদে ১৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নরসিংদীর ফলাফল ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বেলাব উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতে নৌকা ও ৩টি স্বতন্ত্র এবং শিবপুর উপজেলায় ৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি স্বতন্ত্র ও ৩টি নৌকা বিজয় হয়েছে।