ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ও ১৬২ (২) ধারায় সাক্ষীদের স্বাক্ষর ব্যতীত জবানবন্দি নেওয়া এবং তা তদন্তের কাজে ব্যবহার করার পুলিশের ক্ষমতা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (৯ জানুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২১ মে বাড়ি থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হন রাজশাহীর মধ্য নওদাপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল রক্ষিত। পরে তার লাশ পাওয়া যায় শাহ মাখদুম থানার কাছাকাছি একটি গাছের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায়।
শ্যামল রক্ষিতের স্ত্রী নমিতা রক্ষিতের অভিযোগ, ওই ঘটনার পরে তিনি মামলা করতে গেলে থানায় এজাহার গ্রহণ করলেও তা এফআইআর হিসাবে তালিকাভুক্ত করেনি। এমনকি তাকে ভুল বুঝিয়ে দীর্ঘদিন কোর্টে যেতেও বিরত রাখা হয়।
এদিকে, কোন রকমের এজাহার দায়ের বা অপমৃত্যু মামলা দায়ের ব্যতীত লাশের ময়নাতদন্ত করেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের লেকচারার এনামুল হক, যেখানে ফরেনসিক বিভাগের কোনও অধ্যাপকের স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি এবং প্রথমে হত্যা লিখেও পরে কাটাকাটি করে আত্মহত্যা বলা হয়।
পরবর্তী সময়ে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী মামলা করলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পিবিআই ভুয়া সাক্ষী, ১৬১ ধারায় ভুয়া জবানবন্দি রেকর্ড করে এবং অবৈধ ময়নাতদন্তের ওপর ভিত্তি করে ফাইনাল রিপোর্ট দেয়।
পরে ওই ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইজিপিসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে দরখাস্ত দেওয়া হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই ১৬১ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং ওই মামলায় ন্যায়বিচার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন নমিতা রক্ষিত।