প্রায় চার দশক আগে ১৯৮২ সালে হাটের ইজারার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজশাহীর চারঘাটের ১ নং বাজুবাঘা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলায় হয়। পাঁচ বছর পর ১৯৮৭ সালে ওই মামলায় তাঁকে ৫ বছরের দণ্ড এবং ৪২ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। বিচারিক আদালতের সেই দণ্ড ও জরিমানার বিরুদ্ধে ১৯৮৮ সালে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। এরমধ্যে ২০০১ সালে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান তিনি।
আপিলকারীর মৃত্যুর প্রায় দুই দশক পর আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিচারপতি মো.আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া (মিতি)। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।
জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাটের ১ নং বাজুবাঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আব্দুস সোবহান। তিনটি হাট লিজ দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ১৯৮২ সালের ৯ জুন চারঘাট থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলায় ৪০ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
এই মামলায় একই বছরের ১০ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। বিচার শেষে ১৯৮৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। রায়ে তাকে ৫ বছরের জেল ও ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ১৯৮৮ সালে আপিল (আপিল নং ১৮৬১৯৮৮) করেন আব্দুস সোবহান। এই আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় ২০০১ সালে মারা যান সোবহান।
কিন্তু আপিলে দুদককে পক্ষ করা হয়নি। পরে দুদক এই মামলায় পক্ষ হয়ে শুনানিতে অংশ নেয়।
আদেশের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সামিরা তারান্নুম রাবেয়া (মিতি) জানান, আপিলকারী মারা গেলে আইনের বিধান হচ্ছে আপিলটা অ্যাবেট (বাদ) হয়ে যাবে দণ্ড ও সাজার ক্ষেত্রে। কিন্তু জরিমানাটা থেকে যাবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া বলেন, আজ এই জরিমানার বিষয়ে শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত আপিল মঞ্জুর করেছেন। যেহেতু আপিল মঞ্জুর হয়েছে, সেহেতু ওই চেয়ারম্যানকে অধস্তন আদালতের দেওয়া ৫ বছরের সাজা বাতিল এবং জরিমানা মওকুফ হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে আপিলের নিষ্পত্তি ঘটলো।