পাকিস্তানের ২৮তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক উমর আতা বান্দিয়াল। রাজধানী ইসলামাবাদে আওয়ানে সদরে এক অনুষ্ঠানে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) তাকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া, জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কাইসার, সিনেট চেয়াম্যান সাদিক সাঞ্জরানি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি, তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা, সিনিয়র আইনজীবীরা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রীরা।
এর আগে, পাকিস্তানের সংবিধানের অধীনে সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারক উমর আতা বান্দিয়ালকে প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে গতকাল ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁর নিয়োগ কার্যকর হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্বে থাকবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২১ শে ডিসেম্বর তাকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল। গত ১ ফেব্রুয়ারি অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি।
বান্দিয়াল যখন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিলেন তখন তার সামনে রয়েছে ৫১ হাজার ৭৬৬টি মামলার বোঝা। শুধু সুপ্রিম কোর্টে এসব মামলা মুলতবি অবস্থায় আছে। সর্বোচ্চ আদালত, জেলা আদালতসহ পাকিস্তানের বিচার বিভাগে এমন মামলার সংখ্যা কমপক্ষে ২১ লাখ।
বিচারপতি বান্দিয়ালের সংক্ষিপ্ত জীবনী
বিচারপতি বান্দিয়ালের জন্ম ১৯৫৮ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর লাহোরে। তিনি কোহাট, রাওয়ালাপিণ্ডি, পেশোয়ার এবং লাহোরে বিভিন্ন স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর কেমব্রিজ থেকে ল’ ত্রিপোস ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনের অভিজাত লিঙ্কনস ইন থেকে ব্যারিস্টার অ্যাট ল’ সম্পন্ন করেছেন। ১৯৮৩ সালে লাহোর হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন। এর দু’চার বছরের মধ্যে তিনি পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
লাহোরে আইনি চর্চা করার সময় বিচারপতি বান্দিয়াল প্রধানত বাণিজ্যিক, ব্যাংকিং, ট্যাক্স এবং সম্পদ বিষয়ক মামলা দেখাশোনা করেছেন। ১৯৯৩ সালের পর তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিরোধ মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর তিনি লাহোর হাইকোর্টের একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০০৭ সালের নভেম্বরে সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের সময়ে প্রভিশনাল কনস্টিটিউশন অর্ডারে অধীনে নতুন করে বিচারক হিসেবে শপথ নিতে অস্বীকৃতি জানান।