যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসল আসামির পরিবর্ততে অন্য এক ব্যক্তিকে সাজা খাটানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অ্যাডভোকেট শরীফ শাহরিয়ার সিরাজীর রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) আবু সাঈদ চৌধুরী ওই আইনজীবীকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
কোতয়ালী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মাহমুদুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজীকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক আবু সাঈদ চৌধুরী। শুনানি শেষে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা যায়, ২০১৭ সালে বড় সোহাগসহ তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ড দেওয়ার এক বছর পর সোহাগ সেজে হোসেন নামে এক ব্যক্তি জামিনের আবেদন করেন। এরপর আদালত ওই ব্যক্তির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চার বছর পর গত ১ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এ হাজির করা হয় সোহাগ নামধারী হোসেনকে। এ সময় প্রকৃত আসামি সোহাগকেও আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে সবকিছু স্বীকার করেন তিনি। হোসেন জানান, স্বেচ্ছায় তিনি মামাতো ভাইয়ের হয়ে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান।
এরপর আদালত সোহাগ সেজে চার বছর কারাগারে থাকা হোসেনকে কদমতলী থানার টিটু হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। মামলার যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি সোহাগকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
পাশাপাশি কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে হোসেনকে সোপর্দ করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেয়াসমিন আক্তার।
একই সঙ্গে হোসেন, মূল আসামি বড় সোহাগ, তার দুই আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) নির্দেশ দেন।
সিএমএম ওই নির্দেশ পাওয়ার পর কোতোয়ালী থানাকে মামলা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে মিথ্যা তথ্য ও প্রতারণার দায়ে হোসেন ও তার আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানাকে আদেশ দেন আদালত।